সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সীমান্তে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের যোগ্য জবাব পেল পাকিস্তান। অধিকৃত কাশ্মীরে আর্টিলারি হামলা চালিয়ে সেনা-জঙ্গি মিলিয়ে অন্তত ৩০-৩৫ জন পাক নাগরিককে নিকেশ করেছে সেনা। কয়েকটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, ভারতীয় সেনার আর্টিলারি হামলায় অন্তত ২২ জন জইশ ও হিজবুল জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। ৬ জন পাকিস্তানি সেনা জওয়ানও প্রাণ হারায়। আরও বেশ কয়েকজন আহত। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও পাকিস্তানের দাবি, মোট ৬ জন সাধারণ নাগরিক ও একজন সেনা আধিকারিক প্রাণ হারিয়েছে।
এদিন জঙ্গিদের অন্তত লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করার খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘কাশ্মীরে শান্তিপ্রক্রিয়ায় বারবার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে পাকিস্তান। পাক সেনা ও জঙ্গিদের যৌথ হামলায় বারবার ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে সীমান্তের গ্রামগুলিতে। এদিনও পাক সেনার কাপুরুষোচিত আক্রমণের জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনা। যা খবর মিলছে তাতে অন্তত ১০-১২ জন পাক সেনা ও সমসংখ্যক জঙ্গি নিকেশ হয়েছে আর্টিলারি হামলায়। এই সংখ্যাটা বাড়াতেও পারে। সে তথ্য পেলেই আমরা প্রকাশ করব। তবে আবার পাক সেনা সীমান্তে শান্তি বিঘ্নিত করলে ভারতীয় সেনা প্রত্যাঘাতের জন্য সদা প্রস্তুত।’
রবিবার ভোর থেকেই বিনা প্ররোচনায় কুপওয়ারা সীমান্তে গুলি চালানো শুরু করে পাক সেনা। শহিদ হন দুই ভারতীয় সেনা। আরও দুই সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়। এরপরই প্রত্যাঘাত শুরু করে ভারতীয় সেনা। শুরু হয় আর্টিলারি হামলা। অনেকটা টার্গেট করা হয় জুরা, লেপা, নীলম সেক্টরকে। ভারতীয় সেনার প্রত্যাঘাতে নিমেষে গুঁড়িয়ে যায় অন্তত তিনটি জঙ্গি ঘাঁটি। ধ্বংস হয়ে যায় জঙ্গিদের লঞ্চপ্যাডও। এই হামলায় হিজবুল ও জইশ মিলিয়ে অন্তত ২২ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে, এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি। অন্যদিকে অপর এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, এই হামলায় প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৩৫ জন জেহাদির। এছাড়াও বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা জঙ্গিদের আড়াল করার চেষ্টা করছিল। তাঁরাও ভারতীয় সেনার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে। অন্তত ৬ থেকে ১১ জন পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
যদিও, সেনার তরফে এখনও সরকারিভাবে সীমান্তের ওপারে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো হয়নি। তবে পাকিস্তানের দাবি, একজন পাক জওয়ান ও ৬ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ভারতের এই হামলার পর পালটা গোলাবর্ষণ শুরু করেছে পাক সেনাও। যার জেরে সীমান্তের এপারেও বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর। এদিকে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে নয়াদিল্লিতেও। ইতিমধ্যেই সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল হয়েছে গত পাঁচই আগস্ট। তারপর থেকেই সংঘর্ষবিরতির পরিমাণ বেড়েছে। কোনও প্ররোচনা ছাড়াই যখন খুশি গোলাগুলি ছুঁড়ছে পাকিস্তান। শুধু আগস্ট মাসেই মোট ৩০৬ বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করেছে তারা। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এবছর মোট ২০৫০ বার এই ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে রবিবারের ঘটনা নিয়ে মোট ২৩ জন জওয়ান শহিদ হয়েছেন। তবে পালটা জবাব দিতে ভোলেনি ভারতও। প্রায় প্রতিবারই পাকিস্তানের জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা রোখার পাশাপাশি বেশ কয়েকজন পাক সেনা ও জঙ্গিকে খতম করেছে।
#UPDATE Sources: Terrorist launch pads in PoK’s Jura, Athmuqam and Kundalsahi were targeted by Indian Army artillery guns last night after credible inputs came of significant number of terrorists operating there. pic.twitter.com/mICB8Z9P4K
— ANI (@ANI) October 20, 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.