সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়াতে এবং বেকারত্ব কমিয়ে দ্রুত কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বড় ধরনের আর্থিক সংস্কার (বিগ ব্যাং) প্রয়োজন। এমনটাই মনে করছেন নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার। মোদি জমানায় যোজনা পর্ষদের বদলে নীতি (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ট্রান্সফর্মিং ইন্ডিয়া) আয়োগ চালু করা হয়েছিল। এবং সেই সংস্থার ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছে রিপোর্ট করেন। এ হেন গুরুত্বপূর্ণ কর্তাই দাবি করেছেন, শিল্পোন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ করা হবে। যার মধ্যে শ্রম আইন সংস্কার, বেসরকারিকরণ নীতিতে বদল, শিল্পের জন্য ‘ল্যান্ড ব্যাংক’ তৈরির মতো বিষয় রয়েছে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজীব কুমার বলেছেন, “বিদেশি লগ্নিকারীদের খুশি হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। নিশ্চিত করে বলছি, বড় ধরনের একাধিক আর্থিক সংস্কার হবেই। চাকা গড়ানোর জন্য আমরা মাটিতে অত্যন্ত জোরদার আঘাত করব।” উল্লেখ্য, নীতি আয়োগের শীর্ষে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। রাজীব কুমারের আরও ইঙ্গিত, আগামিদিনে এয়ার ইন্ডিয়া-সহ অন্তত ৪২টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পুরোপুরি বেসরকারিকরণ বা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্র। ধারাবাহিক ক্ষতির মুখে থাকা এয়ার ইন্ডিয়ায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমাও তুলে দেওয়া হতে পারে। যাতে এয়ার ইন্ডিয়ার ক্রেতা পেতে সুবিধা হয়। আবার একটি স্বশাসিত ‘হোল্ডিং কোম্পানি’ তৈরি করা হতে পারে। দেশের সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার নিয়ন্ত্রণ থাকবে ওই সংস্থার হাতে। এবং আলাদা আলাদা মন্ত্রকের কাছে তাদের দায়বদ্ধ থাকতে হবে না। আমলাতান্ত্রিক জট এড়িয়ে সম্পদ বিক্রির পথ এর ফলে ত্বরান্বিত হবে।
কী কী সংস্কার আশু প্রয়োজন? রাজীব কুমার জানিয়েছেন, জুলাইয়ে সংসদের পরবর্তী অধিবেশনের শুরুতেই জটিল শ্রম আইন সংস্কার করে পেশ করা হতে পারে। সংসদের নিম্নকক্ষ অর্থাৎ লোকসভায় এ বিষয়ে বিল আনা হবে। শ্রম সংক্রান্ত ৪৪টি আইনকে চারটি মূল ভাগে বিন্যস্ত করা হবে। বেতন, শিল্প সম্পর্ক, সামাজিক নিরাপত্তা এবং শ্রমিক কল্যাণ ও পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কাজের শর্তাবলি। যার জেরে শ্রমিকদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কর্তৃপক্ষের বিবাদ-বিতর্কের সম্ভাবনা কমবে। সরকার ও আদালতের বিভিন্ন স্তরে জটিল, দীর্ঘমেয়াদি অভিযোগ জানানোর পালা, মামলার সংখ্যাও কমবে।
পাশাপাশি, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার অব্যবহৃত জমি বিদেশি বেসরকারি সংস্থার কাছে নতুন শিল্প স্থাপনের জন্য তুলে দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। রাজীব কুমার জানিয়েছেন, ওই সমস্ত জমি দিয়ে ‘ল্যান্ড ব্যাংক’ তৈরি করা হবে। সেগুলিকে বিভিন্ন ক্লাস্টার বা শ্রেণিতে ভাগ করা থাকবে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট শ্রেণির জমি নির্দিষ্ট ধরনের শিল্প বা বাণিজ্যিক সংস্থাকে দেওয়া হবে। নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যানের মত, বেসরকারি জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতার ঝুঁকি থেকেই যায়। অনেক ক্ষেত্রেই কৃষিজমি অধিগ্রহণ ও তার জেরে প্রতিবাদ-আন্দোলনের জেরে সমস্যা তৈরি হয়। জমির অধিকার, পরিবেশ ও অন্য ইস্যুতে মামলাও হয়েছে। সরকারি জমির ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি থাকবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.