সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনের মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকে বদলে গিয়েছে এশিয়ার এই অঞ্চলের পরিস্থিতি। আগে যে বিষয়গুলো অসম্ভব বলে মনে হত এখনই সেগুলিকেই চোখের সামনে বাস্তব হতে দেখা হচ্ছে। বদলে যাচ্ছে ভারতের সঙ্গে এশিয়ার কিছু দেশের সম্পর্কের রূপও। একদিকে যেমন নেপাল ও অনেক ক্ষেত্রে ভুটান সরকারের কিছু আচরণের মধ্যে শত্রুতার মনোভাব রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। অন্যদিকে তেমনি জাপান বা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আগের থেকে অনেক বাড়ছে যোগাযোগ। তার ফলশ্রুতিতেই দীর্ঘদিনের নীতি বদলে ফেলল নয়াদিল্লি। প্রতিবছর বঙ্গোপসাগরের মালাবার উপকূলে জাপান ও আমেরিকার সঙ্গে ভারতীয় নৌ সেনা যে মহড়া চালায়, তাতে এবার অস্ট্রেলিয়াকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে জানা গেল।
এপ্রসঙ্গে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় নৌ সেনার এক আধিকারিক জানান, অনেকদিন ধরেই মালাবার উপকূলে প্রতিবছর জাপান ও আমেরিকার সঙ্গে যৌথ নৌ মহড়া (Naval Drill) -এর আয়োজন করে ভারত। এতদিন চিন অখুশি হবে মনে করে ভারত এই মহড়ায় অস্ট্রেলিয়াকে অংশ নিতে দিত না। আপত্তি জানাত। কিন্তু, লাদাখের ঘটনা পুরো ছবিটাই বদলে দিয়েছে। বেজিং কী মনে করবে তা আর ভাবছেই না দিল্লি। তাই এই বছরের শেষদিকে মালাবার উপকূলে হতে চলা যৌথ নৌ মহড়ায় ভারত, জাপান ও আমেরিকার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়াকে অংশ নিতে দেখা যাবে। এই বিষয়ে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়া সরকারের কাছে আমন্ত্রণ পাঠাচ্ছে দিল্লি।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এশিয়াজুড়ে চিনের আগ্রাসন রুখতে এক দশক আগেই আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ‘কোয়াড (Quadrilateral Security Dialogue)’ নামে একটি জোট গড়ে তুলেছে ভারত। কিন্তু, এতদিন জাপান ও আমেরিকার সঙ্গে ভারত যৌথ নৌ মহড়া চালালেও অস্ট্রেলিয়ার অংশগ্রহণে তাদের আপত্তি ছিল। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়াও চিন অখুশি হবে এরকম কোনও কাজ করত না। কিন্তু, স্কট মরিসন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই চিনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছে তারা। করোনা ভাইরাসের কারণে তা আরও বেড়েছে। তাই লাদাখে ভারতের সঙ্গে চিনের সেনার সংঘর্ষের পরে বেজিংয়ের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া দিল্লির পাশে থাকারই বার্তা দিয়েছিল। তারই ফলশ্রুতিতে দীর্ঘদিনের নীতি বদলে ফেলল দিল্লি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.