সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মঞ্চে অত্যন্ত জটিল সমীকরণ তৈরি করেছে ইউক্রেন যুদ্ধ (Ukraine)। আমেরিকা ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ‘ভারসাম্য’ বজায় রাখা কঠিন হয়ে উঠছে ভারতের পক্ষে। বিশেষ করে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জেরে রুশ অস্ত্র আমদানি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তাই এবার জাতীয় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সমরাস্ত্রের উৎপাদন বাড়াচ্ছে ভারত। এককথায়, চিন ও পাকিস্তানের মতো পড়শি থাকায় অস্ত্রের ভাণ্ডার আরও মজবুত করতে চায় মোদি সরকার।
বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হওয়ার দিশায় আরও একধাপ এগিয়ে একগুচ্ছ যুদ্ধের সরঞ্জাম আমদানির নিষিদ্ধ করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। এই বিষয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, “ভারতকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলাই আমাদের উদ্দেশ্য।” বলে রাখা ভাল, চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ অস্ত্রই রাশিয়া থেকে আমদানি করে ভারতীয় ফৌজ। এহেন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে অশনি সংকেত দেখছেন নীতি নির্ধারকরা।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলসেনা ভারতের। আমাদের বিমানবাহিনী চতুর্থ বৃহত্তম। ভারতের নৌসেনা বিশ্বেরয়ে সপ্তম। দীর্ঘমেয়াদে এতবড় ফৌজ শুধুমাত্র বিদেশ থেকে কেনা অস্ত্রের জোরে টিকে থাকতে পারে না। তাই অ্যাটাক হেলিকপ্টার ও ট্যাঙ্ক ইঞ্জিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে। একইসঙ্গে, মিসাইল, নজরদারি বিমান-সহ বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক অস্ত্রের উৎপাদন বাড়িয়ে তোলা হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, দেশীয় অস্ত্র নির্মাতাদের সঙ্গে প্রায় ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমধ্যমরে ভারতীয় সেনার প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ডি এস হুদা বলেন, “গতবছর ভারতে আসেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, সেই সময় ট্যাঙ্কের ইঞ্জিন, অ্যাটাক হেলিকপ্টার, করভেট, মিসাইল ও নজরদারি বিমান তৈরি বেশ কয়েকটি কারখানা ভারতে তৈরি করার কথা বলেন তিনি। অর্থাৎ দেশেই বেশ কিছু যন্ত্রাংশ তৈরি হবে।” বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে হুদা বলেন, “ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে রাশিয়ার ফৌজের লোকসান হয়েছে। ফলে সেই ক্ষতিপূরণে বেশ কিছু সরঞ্জাম তাদেরই প্রয়োজন হবে।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারতকে রাশিয়া থেকে অস্ত্র আমদানি কমানোর বার্তা দিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন, আমেরিকা চাইছে রাশিয়া থেকে অস্ত্র কেনা কমিয়ে দিক ভারত। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের (Ukraine war) জেরে সম্প্রতি তুঙ্গে পৌঁছেছে ভারত ও আমেরিকা মধ্যে চলা কূটনৈতিক টানাপোড়েন। ওয়াশিংটনের দাবি, মস্কোর সঙ্গ ত্যাগ করে যুদ্ধের বিরোধিতায় সরব হোক নয়াদিল্লি। রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি নিয়ে মোদি সরকারের কাছে ঘোর আপত্তি জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। মার্কিন ফরমান না মানলে ভবিষ্যতে ভারত যে সমস্যাআর মুখে পড়তে পারে সেই ইঙ্গিতও দিয়েছে দেশটি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.