নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান দেশে ফিরতেই ভারত-পাকিস্তান চাপান উতোরে ইতি ঘটবে, এমনটা মনে করার কারণ নেই। বরং আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইসলামাবাদকে আরও কোনঠাসা করতে তৎপর হয়ে উঠেছে নয়াদিল্লি। এবার শুধু কূটনৈতিক অস্ত্র প্রয়োগ করে বিশ্বের দরবারে পাকিস্তানের ভাবমূর্তি ছোটো করাই নয়, পাকিস্তানকে সামরিকভাবে দুর্বল করার কূট-কৌশলও নিয়েছে মোদি সরকার। সেই মতোই ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করছে সাউথ ব্লক। ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের অস্ত্রভাণ্ডারের ‘অপব্যবহার’ বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে ভারত কাজ শুরু করে দিয়েছে। এ বিষয়ে নিজেদের দাবি আমেরিকার কাছে তথ্য প্রমাণসহ পেশ করছে নয়াদিল্লি।
[দেশে ফিরেই অগ্নিপরীক্ষার মুখে অভিনন্দন ]
ভারত ও পাকিস্তান, উভয়কেই যে সব দেশ অস্ত্র বিক্রি করে তাদের সঙ্গে কথা বলে পাকিস্তানের অস্ত্র কেনার উপর বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হবে। বোঝানোর চেষ্টা হবে, পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহের অর্থ সন্ত্রাসে মদত দেওয়া। সেই অস্ত্র সন্ত্রাসেই অপব্যবহার হয়। কয়েকটি দেশের ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে অস্ত্র বিক্রি করলে ভারত আর তাদের কাছ থেকে অস্ত্র কিনবে না, এমন শর্তারোপের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আমেরিকা, রাশিয়া, ফ্রান্স, ইতালি, সুইডেন, ইউক্রেন ও ব্রাজিল– এই দেশগুলি ভারত-পাক উভয় দেশকেই অস্ত্র সরবরাহ করে। অস্ত্রবিক্রির বাজারের সবথেকে বড় দুই দেশ রাশিয়া ও ফ্রান্স এই তালিকায় রয়েছে ঠিকই, তবে দুই দেশের সঙ্গেই ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। দুই দেশের সঙ্গেই ভারতের অস্ত্র কেনাবেচার বড়সড় লেনদেনও চলছে। আর্থিকভাবে দুর্বল পাকিস্তানের থেকে তাদের কাছে ভারতের মতো ক্রেতা প্রাধান্য পাবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। সেক্ষেত্রে তারা অস্ত্র বিক্রি বন্ধ না করলেও, পাকিস্তানকে শর্তারোপ করতে পারে।
[পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরলেন বায়ুসেনার বীর পাইলট অভিনন্দন, আপ্লুত দেশবাসী]
শুধু ভারতকেই অস্ত্র বিক্রি করে, কানাডা, স্পেন, ব্রিটেন, নেদারল্যান্ড, জামার্নি, পোল্যান্ড, ইসরায়েল, কিরঘিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশ যাতে পাকিস্তানকে অস্ত্র বিক্রি না করে, তা সুনিশ্চিত করতে চেষ্টা করা হবে। ইজরায়েলের সঙ্গে ভারতের অত্যন্ত সুসম্পর্ক, তারা পাকিস্তান বিরোধী বলেই পরিচিত। তাই তাদের নিয়ে ভারতের বিশেষ চিন্তা নেই। জামার্নি ভারতকে অসন্তুষ্ট করে পাকিস্তানের সঙ্গে অস্ত্রকেনাবেচার চুক্তিতে যাবে না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। শুধু পাকিস্তানকেই অস্ত্র বিক্রি করে চীন, তুরস্ক, সার্বিয়া ও জর্ডন। তবে, কূটনৈতিক স্তরের আলোচনার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সতর্ক করার জন্য ভারত যে চেষ্টা করবে সেই সম্ভাবনা খারিজ করে দেওয়া যায় না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.