সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের অভিসন্ধি নিয়ে ভারতকে সতর্ক করলেন নির্বাসিত তিব্বতি সরকারের প্রতিনিধি লবসাং সাংগে। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘তিব্বতের সঙ্গে যা হয়েছে তা দেখে শিক্ষা নিক ভারত’। নয়াদিল্লির উদ্বেগ বাড়িয়ে তিনি সতর্ক করেন, লাদাখ চিনা মাস্টারপ্ল্যানের একটি পর্ব মাত্র।
ভারতে নির্বাসিত তিব্বতি সরকারের ‘Central Tibet Administration’-এর প্রেসিডেন্ট লবসাং সাংগে বলেন, “চিন মাও জে দংয়ের নীতি পালন করছে। তিব্বত দখল করার পর মাও বলেছিলেন, হাতের তালু দখল করা হয়েছে এবার পাঁচটা আঙুল কবজা করতে হবে। সেই পাঁচটা আঙুল হচ্ছে–লাদাখ, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ, ভুটান ও নেপাল। ফলে নয়াদিল্লির এটা বোঝা উচিত যে চিন (China) আগ্রাসন থামাবে না।”
চিনের পরিকল্পনা ফাঁস করে লবসাং আরও জানান, ডোকলামে (Doklam) চিনা আগ্রাসন একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ মাত্র ছিল। সেই কথাই গত ৬০ বছর ধরে তিব্বতি নেতারা নয়াদিল্লির নীতিনির্ধারকদের বোঝানোর চেষ্টা করছে। উল্লেখ্য, বিগত ৪৫ বছরের ইতিহাসে প্রাণহানির কুৎসিততম নজির গড়েছে গালওয়ান। পূর্ব লাদাখে ওই উপত্যকায় ভারতীয় ভূখণ্ড রক্ষা করতে গিয়ে ১৫ জুন চিনা বাহিনীর হামলায় শহিদ হয়েছেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। তারপর থেকেই লাগাতার আলোচনা চলছে দু’দেশের মধ্যে। তবে বিবাদ কিছুতেই মিটছে না। এখনও গালওয়ানে ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে লাল ফৌজ।
প্রসঙ্গত, ৬২’র ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে চীনের সঙ্গে প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটারের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পরিকাঠামো নির্মাণে মন দিয়েছে ভারত। মনমোহন সিংয়ের UPA থেকে শুরু করে নরেন্দ্র মোদির NDA সরকার পর্যন্ত সামরিক পরিকাঠামো নির্মাণে জোর দিয়েছে। ফলে ওই অঞ্চলে ভারতের শক্তি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এতেই অশনি সংকেত দেখছে চিন। কারণ ২০১৪’র পর ভারতে ‘জাতীয়তাবাদ’-এর বিপুল উত্থানে লাল ফৌজের দখলে থাকা লাদাখের ‘আকসাই চিন’ উদ্ধারের দাবি জোর পাকড়েছে। ফলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গালওয়ান উপত্যকার দখল নিতে মরিয়া চিন। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে, দুর্গম এলাকার ভারতীয় পোস্ট দউলত বেগ ওল্ডি (ডিবিও) পর্যন্ত ২৫৫ কিলোমিটার লম্বা রাস্তা আগেই বানিয়ে ফেলেছিল ভারত। গত বছর সেই সড়কের উপর একটি সেতুর উদ্বোধন করে আসেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই রাস্তারই শাখাপ্রশাখা তৈরি করতে শুরু করেছিল বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)। সঙ্গে শিয়ক নদীর উপর আরও বেশ কয়েকটি সেতু। তাতেই ক্রুদ্ধ হয় চিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.