সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৬২-র পর এই প্রথম সিকিম সীমান্তে বিপুল সেনা পাঠাল ভারত। সীমান্তে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এবং চিন নিজেদের সামরিক অবস্থানে অনড় থাকায় কোনও ঝুঁকি না নিয়ে অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে এমন খবর মিলেছে। দার্জিলিংয়ের সুকনায় ৩৩ নম্বর কোরের সেনা শিবির থেকে চিন সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা পাঠানো হয়েছে।
কতজন সেনা পাঠানো হয়েছে তা কৌশলগত কারণেই প্রকাশ করা হচ্ছে না। প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিবাদমান ডোকা লা সীমান্তে নিজেদের অবস্থান ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও মজবুত করাই ভারতের লক্ষ্য। কিন্তু ‘কোনওভাবেই লালফৌজের কোনও প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না’, ‘আগেভাগে আক্রমণাত্মক হওয়া যাবে না’, ‘চিনা আগ্রাসন ও রাস্তা তৈরি রুখতে মজবুত ও নিশ্ছিদ্র মানবপ্রাচীর তৈরি করতে হবে’ বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ভারতীয় জওয়ানদের। সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন এবং ‘বন্দুকের নল নিচের দিকে রেখে’ পজিশন নেওয়ার এই ঘটনাকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘নন কমব্যাটিভ মোড’ বা যুদ্ধের মনোভাবহীন জমায়েত। অর্থাৎ অস্ত্রের মুখ থাকবে নীচের দিকে, কিন্তু নজরদারি ও প্রতিরোধ থাকবে কঠোর।
১৯৬২ সালের চিন—ভারত যুদ্ধের পর সিকিম সীমান্তে দুই দেশের এত বড় সেনা সমাবেশ এই প্রথম। ২০ জুন সিকিম সীমান্তে দু দেশের সেনা জওয়ানদের মধ্যে হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি হয়। সীমান্তে অবৈধভাবে রাস্তা তৈরি ও গোপন ঘাঁটি তৈরিতে চিনা সেনাদের কাজকর্মে বাধা দেন ভারতীয় সেনারা। দুই দেশের সেনা জওয়ানদের মধ্যে তীব্র বচসা, গালাগাল শুরু হয়। হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি চলে বেশ কিছুক্ষণ। দুই দেশের সেনারাই ঘটনাটিকে ভিডিও করে রাখে ক্যামেরায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় এই ঝামেলার ছবি। ডোকা লা এলাকার লালতেন আউটপোস্টের কাছে ২০১২ সালে দুটি সেনা বাঙ্কার তৈরি করেছিল ভারত। টহলরত সেনাদের সাময়িক বিশ্রামের জায়গা হিসাবে ব্যবহৃত হত বাঙ্কার দুটি। কিন্তু বাঙ্কার দুটি সরিয়ে নিতে ভারতকে বলে চিন। তা মানতে অস্বীকার করেন ভারতীয় সেনারা। ফলে ভারতীয় জওয়ানদের অনুপস্থিতির সুযোগে বাঙ্কার দুটি ভেঙে দেয় চিন। এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় সিকিম সীমান্তে। অন্যদিকে, রাস্তা তৈরি নিয়ে চিনা সেনাদের অতি সক্রিয়তার তীব্র বিরোধিতা করে প্রতিবাদ জানায় ভুটানের সেনাও। চাম্বি ভ্যালি উপত্যকায় মুখোমুখি পজিশন নেয় দুই দেশের চার হাজার করে সেনা। যুদ্ধং দেহি মনোভাব বজায় রাখতে নিজেদের ১৪১ নম্বর ডিভিশন থেকে অতিরিক্ত কয়েক হাজার সেনা পাঠায় চিন। সম্ভাব্য আগ্রাসনের আশঙ্কায় সুকনা থেকে বাড়তি সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় ভারতও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.