Advertisement
Advertisement
China

ভারতীয় বাহিনীর দখলে প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকা, পিছু হঠেছে লালফৌজ

প্যাংগং সো রেঞ্জ চিন ও ভারতীয় বাহিনীর জন্য কৌশলগত কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

India Now In Control Of South Pangong Tso Area
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:September 1, 2020 3:54 pm
  • Updated:September 1, 2020 6:11 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গালওয়ানে ২০ জন শহিদের রক্তে গাফিলতির খেসারত দিয়েছে ভারত। কিন্তু এবার পরিস্থিতি পালটেছে। তাই চৈনিক ষড়যন্ত্রের আভাস পেয়েই গত শনিবার লালফৌজের অত্যাধুনিক রাডার ও ক্যামেরার চোখে ধুলো দিয়ে দক্ষিণ প্যাংগং লেক সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকার পুরোপুরি দখল নিয়েছে ভারতের সেনাবাহিনী।

[আরও পড়ুন: লাদাখের ১ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা চিনের দখলে! গোয়েন্দা রিপোর্টে উদ্বেগ]

গত মার্চ মাস থেকেই প্যাংগং হ্রদের উত্তর পারে আগ্রাসন চালিয়ে আসছিল চিনা বাহিনী। কিন্তু পরিস্থিতি আরও ঘোরাল হয়ে ওঠে আগস্ট ২৯ ও ৩০ তারিখে। একতরফাভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার অবস্থান বদলে ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করতে এগিয়ে আসে প্রায় ২০০ চিনা সৈনিকের একটি দল। তবে এবার প্রস্তুত ছিল ভারতীয় বাহিনী। আগ্রাসন প্রতিহত করে এতদিন পর্যন্ত ফাকা পড়ে থাকা প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণে পাহাড়ি অঞ্চলগুলির দখল নিয়ে নেয় ভারতীয় সেনা। বেগতিক দেখে পিছিয়ে যায় লালফৌজ। যদিও চিনের দাবি, তারা সীমান্তে কোনও রকম আগ্রাসন দেখায়নি। উলটে ভারতীয় সেনাদের বিরুদ্ধেই সীমান্ত পার হয়ে উত্তেজনা ছড়াবার অভিযোগ তুলেছে।

Advertisement

গালওয়ান উপত্যকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর সামরিক স্তরে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে ভারত ও চিনের। ভারতীয় সেনার ১৪ নম্বর কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহ এবং চিনের শিনজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্ট কমান্ডার মেজর জেনারেল লিউ লিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে রাজিও হয়েছিলেন। কিন্তু সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে রাজি হয়েও ফের চিনা হামলায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লি। তাই আগেভাগেই প্যাংগংয়ে উঁচু জায়গা দখল করেছে ভারতীয় ফৌজ। বেশ কিছু এলাকায় দু’দেশের ট্যাঙ্ক বাহিনী পরস্পরের নিশানায় রয়েছে। প্যাংগং পরিস্থিতি পর্যালোচানার জন্য মঙ্গলবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং সেনাপ্রধান এম এম নারাভানে বৈঠকে হাজির ছিলেন।

উল্লেখ্য, বৈঠকের পরও প্যাংগং লেক ও ফিঙ্গার এলাকাগুলি থেকে পিছু হটতে রাজি হয়নি চিনারা। বরং পূর্ব লাদাখের গালওয়ান, গোগরা, হট স্প্রিং, দেপসাং সমতলভূমি, প্যাংগং হ্রদ ও পাহাড়ির খাঁজ বা ফিঙ্গার পয়েন্টগুলোতে চিনের বাহিনীকে ঘাঁটি গেড়ে থাকতে দেখা যায়। ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্যাংগং লেকের দক্ষিণের অংশ এখন ভারতীয় সেনার নজরদারিতে রয়েছে। চিনের বাহিনী তাদের সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।

৪ হাজার ২৭০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত প্যাংগং সো রেঞ্জ চিন ও ভারতীয় বাহিনীর জন্য কৌশলগত কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১৩৫ কিলোমিটার ব্যাপ্ত এই হ্রদের সংলগ্ন এলাকায় আধিপত্য কায়েমের জন্য মরিয়া বেজিং। প্যাংগং হ্রদ ও তার আশপাশের পাহাড়ি খাঁজ মিলিয়ে প্রায় ৬০০ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকা রয়েছে। এই হ্রদের উত্তর তীরে রয়েছে কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি। তাজাকিস্তান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, চিন ও ভারত জুড়ে বিস্তৃত কারাকোরাম রেঞ্জ শেষ হয়েছে প্যাংগং হ্রদের উত্তর সীমায়। দক্ষিণ ভাগে রয়েছে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা পাহাড় যা ধাপে ধাপে নেমে গেছে স্পানগুর লেকের দিকে। এই হ্রদ ও তার সংলগ্ন এলাকার দুই তৃতীয়াংশেই নিজেদের অধিকার ফলাবার চেষ্টা করে চিন। কারণ বিতর্কিত ভূখণ্ড আকসাই চিন তাদের দখলে চলে যাওয়ায় কারাকোরাম পাস চিনের বাহিনীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে এই এলাকার ৪৫ কিলোমিটারে টহল দেয় ভারতীয় বাহিনী। ওই এলাকা থেকেও ভারতীয় সেনাকে সরিয়ে নিজেদের জমি দখলের চেষ্টা করছে চিন।

[আরও পড়ুন: সাগরে শক্তি প্রদর্শন, এবার ‘বন্ধু’ রাশিয়ার সঙ্গে নৌ মহড়ায় ভারত]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement