সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের পর করোনা সংক্রমণের উপকেন্দ্র এখন ইউরোপ। সেখানে চলছে মৃত্যু মিছিল। তবে দ্রুত সেই উপকেন্দ্র বদলে যেতে পারে। উপকেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে ভারত। এমনই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে তাঁদের আশঙ্কা, এশিয়ার অন্যান্য প্রান্তে যেভাবে কোভিড-১৯’র সংক্রমণ আটকানো গিয়েছে সেই প্রক্রিয়ায় ভারতে সংক্রমণ রোখা যাবে না। তার অন্যতম কারণ, এ দেশের জনঘনত্ব। ফলে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন রাখার প্রক্রিয়া কতটা কার্যকর হবে, তা প্রশ্ন সাপেক্ষ।
বুধবার সন্ধে পর্যন্ত দেশে কোভিড-১৯ সংক্রামিের সংখ্যা ১৫৯। কিন্তু ১৫ এপ্রিলের মধ্যে এই সংখ্যা দশগুন বেশি হতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও এ দেশে এখনও ‘Community transmission’ শুরু হয়নি। সরকারের ধারণা, সামাজিক মেলামেশা বন্ধ করে ‘Community transmission’ সহজেই এড়ানো যাবে। কিন্তু বিষয়টা এতটাও জলবৎ তরলং নয় বলে দাবি। ভারতের জীবাণু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করেন চিকিৎসক টি জ্যাকব জন। তিনি বলেন, “কিছুদিনের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যাটা দশগুণ বেশি হতে চলেছে। ওঁরা এটা বুঝতে পারছে না, এটা আসলে ধসের মত। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে সব প্রতিরোধ। সময় যত গড়াবে তত পরিস্থিতি খারাপ হবে।”
তাঁদের কথায়, বিদেশে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে রোগের ছোঁয়াচ কিছুটা সম্ভব হয়েছে। ভারত সরকারও সেই সমস্ত ব্যবস্থা নিয়ে ফেলেছে। বন্ধ করা হয়েছে স্কুল-সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সিনেমা হল-শপিং মল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকী জমায়েতের উপরও জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। রোগের উপসর্গ মিললেই পাঠানো হচ্ছে কোয়ারেন্টাইনে। কিন্তু এভাবে কোভিড-১৯’র ছোঁয়াচ এড়ানো সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কথায়, এ দেশে কোয়ারেন্টাইন বা সামাজিকস্তরে মেলামেশা আটকানো সম্ভব নয়। ভারতে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৪২০ জন নাগরিক বাস করে। ফলে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা কার্যত অসম্ভব। সমাজের মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তদের মধ্যে মেলামেশা আটকানো গেলেও নিম্নবিত্ত সম্প্রদায়ের মধ্যে সেই মেলামেশা আটকানো কার্যত অসম্ভব। ভারতে বেশিরভাগ নিম্নবিত্ত পরিবাবের বাড়ি একেবারে ঘেঁষাঘেষি করে রয়েছে। ফলে তাদের কোয়ারেন্টাইন করে রাখা সম্ভব হবে না। আর তাই ভারতের পরিস্থিতি চিনের চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে পারে বলেই আশঙ্কার প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.