ফাইল ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিপুল ভোটে জিতে ফের মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিমধ্যেই ‘প্রিয় বন্ধু’র সাফল্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। কেবল মোদি নন, ট্রাম্পের বিরাট সাফল্যে মুচকি হাসি সাউথ ব্লকের মুখেও। কারণ খলিস্তানি ইস্যুতে কানাডার ‘তোপ’ থেকে প্রতিবেশী চিনের রক্তচক্ষু- সমস্ত ক্ষেত্রেই ভারতের দিকে খানিকটা ঝুঁকে থাকবেন রিপাবলিকান নেতা।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প জিতলেই নয়াদিল্লির সাউথ ব্লক বেশি খুশি। কমলা হ্যারিসের ভারত-যোগ যতই গভীর হোক, মোদি সরকারের কাছে ট্রাম্পই যে প্রথম পছন্দ তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। মোদি ও ট্রাম্পের অতীত সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। ২০১৯ সালের টেক্সাসে ট্রাম্পের প্রচারে নেমে পড়তে দেখা গিয়েছিল মোদিকে (‘হাউডি মোদি’ স্মরণ করুন)। ট্রাম্পের কট্টর চিন-বিরোধী অবস্থানও ভারতের পক্ষে সুবিধাজনক। ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হলে যে বেজিংয়ের অস্বস্তি বাড়বে তাও নিশ্চিত। পাশাপাশি রিপাবলিকান নেতা ক্ষমতায় এলে যে অগ্রাধিকারের তালিকায় পাকিস্তানের থেকে ভারতই বেশি গুরুত্ব পাবে সেটা ধরেই নেওয়া যায়। ট্রাম্প-পুতিন সখ্যও ভারতকে স্বস্তি দেবে।
সাম্প্রতিক অতীতে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতকে সবচেয়ে অস্বস্তিতে ফেলেছে খলিস্তান বিতর্ক। কানাডার মাটিতে খলিস্তানি জঙ্গি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর খুনে নয়াদিল্লির হাত রয়েছে বলে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে তোপ দেগেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ভারতের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পেশ করতে না পারলেও লাগাতার বিষোদগার করে গিয়েছেন তিনি। ট্রুডোর সুরে সুর মিলিয়েছে জো বাইডেন প্রশাসনও। খলিস্তান ইস্যুতে ভারতের সমর্থনে একবারও সরব হয়নি আমেরিকা। কিন্তু ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে কানাডাকে পালটা দিতে পারেন বলেই আশাবাদী নয়াদিল্লি। তাছাড়াও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অবস্থা প্রসঙ্গে বেশ কয়েকবার খোঁচা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। ট্রাম্পের আমলে সেরকমটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে সাউথ ব্লক। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যেও ওয়াশিংটন বিশেষ বাধ সাধবে না বলেই অনুমান বিশ্লেষকদের।
নয়াদিল্লির আশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প স্বয়ং। নির্বাচনের আগে দীপাবলি উপলক্ষে বার্তায় ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মোদির সঙ্গে সম্পর্কে আরও উন্নতি ঘটাবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বার্তায় ভরসা রাখতে চাইছে নয়াদিল্লি। ট্রাম্প সরকারের আমলে ভারত-মার্কিন বাণিজ্য বাড়তে পারে। চিনের সঙ্গে আমেরিকার ‘বাণিজ্য যুদ্ধে’ও লাভবান হবে ভারতের বণিক মহল। অস্ত্র বিক্রি বা প্রযুক্তি হস্তান্তর- সমস্ত ক্ষেত্রেই আরও গতি আসবে ট্রাম্পের আমলে। তবে অভিবাসন নিয়ে ট্রাম্পের নীতি বরাবরই কঠোর। তার জেরে আমেরিকায় কর্মরত ভারতীয়রা বিপাকে পড়তে পারেন বলেই অনুমান। কিন্তু সবমিলিয়ে ভারত-আমেরিকা সম্পর্কে উন্নতি হবে বলেই আশাবাদী সাউথ ব্লক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.