সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের খুন নিয়ে তলানিতে ঠেকেছে ভারত ও কানাডার সম্পর্ক। সেদেশে সন্ত্রাসবাদ ও ভারতবিরোধী কার্যকলাপ বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। শুক্রবার রাজধানীতে ভারত-আমেরিকা টু প্লাস টু বৈঠকে এই উদ্বেগের কথাই তুলে ধরেছে মোদি সরকার বলে জানিয়েছেন বিদেশসচিব বিনয়মোহন কোয়াত্রা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ভারতের ‘মিত্র’ হলেও খলিস্তানি বিতর্কে ‘বিরূপ মনোভাব’ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন।
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় ভারত-আমেরিকা টু প্লাস টু বৈঠক। মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। এই বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, হামাস-ইজরায়েল সংঘাত-সহ একাধিক বিষয় উঠে এসেছে। যার মধ্যে রয়েছে কানাডা প্রসঙ্গও। আমেরিকার কাছে কানাডায় বৃদ্ধি পাওয়া সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ সম্পর্কে নিজেদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত।
এই বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশসচিব বিনয়মোহন কোয়াত্রা জানিয়েছেন, “আমরা আমাদের উদ্বেগের জায়গাগুলো খুব ভালো করে স্পষ্ট করেছি। আমরা নিরাপত্তা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। আমি নিশ্চিত আপনারা সকলে সাম্প্রতিক প্রকাশ্যে আসা এক ব্যক্তির ভিডিও সম্পর্কে অবগত।”
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই খলিস্তানি কাঁটায় বিদ্ধ হয়ে আছে ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে কানাডার (Canada) প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ আনেন, কানাডার খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের নেপথ্যে ভারতের হাত রয়েছে। এর পর থেকেই ভারত-কানাডা টানাপোড়েন অব্যাহত। দুই দেশই বেশ কয়েকজন কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল আমেরিকা (US)। মার্কিন প্রশাসন সাফ বার্তা দিয়েছিল কানাডার অভিযোগ যদি সঠিক প্রমাণিত হয় তাহলে এই ঘটনার নেপথ্যে যারা রয়েছে তাদের বিচারব্যবস্থার সম্মুখীন হতে হবে। এর পরই কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন ওঠে তাহলে কি এবিষয়ে আমেরিকা ভারতের থেকেও বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে কানাডাকে? যদিও ওয়াশিংটনের দাবি, দুপক্ষকেই সমান গুরুত্ব দিচ্ছে তারা।
অন্যদিকে, ‘বন্ধু’ আমেরিকার এই অবস্থান খুব একটা ভালো চোখে দেখেনি ভারত (India)। গত সেপ্টেম্বর মাসে মার্কিন মুলুকে দাঁড়িয়েই বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর পরিষ্কার বলে দিয়েছিলেন, “কানাডা বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আখড়া হয়ে উঠেছে। যা খুবই উদ্বেগজনক। আমাদের উচিত এই নিয়ে প্রশ্ন তোলা। ভারত সব সময় এর বিরোধিতা করবে। আমেরিকা যখন কানাডা নিয়ে কথা বলে তখন তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অন্যরকম থাকে। আমরা যখন কানাডা নিয়ে কথা বলি তখন আমরা অনেক কিছু খুঁজে পাই। এনিয়ে আমেরিকানদের সঙ্গে কথা বলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দৃঢ়।” এবার আরও একবার কানাডা প্রসঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের কাছে নিজের জায়গা স্পষ্ট করল ভারত। আগামিদিনে এই বিতর্কে আমেরিকা তার ‘বন্ধু’ দেশের পাশে দাঁড়ায় কি না সেদিকে নজর থাকবে কূটনীতিকদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.