সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতি বছর হাজারো শিখ পুণ্যার্থী ইরাবতী নদীর তীরে কর্তারপুর দরবার সাহিবে প্রার্থনা করতে আসেন। ভারত থেকে যেমন পুণ্যার্থীরা কর্তারপুরে যান তেমনই পাকিস্তান থেকেও বহু শিখ পুণ্যার্থী সেখানে আসেন। দেশের পুণ্যার্থীদের যাতায়াতের পথ সুগম করতে পাঞ্জাবের গুরদাসপুর জেলার ডেরা বাবা নানক থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পর্যন্ত একটি রাস্তা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বৃহস্পতিবার এই কথা জানিয়েছেন। ভারত-পাক আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকায় পাকিস্তানের ভিতরে পড়ে কর্তারপুর। জনশ্রুতি, এই কর্তারপুরে গুরু নানক জীবনের ১৮টি বছর কাটিয়েছিলেন। সে কারণেই শিখ সম্প্রদায়ের কাছে এই জায়গাটি অত্যন্ত পবিত্র উপাসনাস্থল। গুরু নানকের ৫৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ মুদ্রা এবং ডাক টিকিট প্রকাশ করার সিদ্ধান্তেও এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সায় দিয়েছে।
[লোকসভার আগেই বিধানসভা ভোট কাশ্মীরে, জানাল নির্বাচন কমিশন]
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই রাস্তা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গুরু নানকের ৫৫০তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রের এনডিএ সরকার। একই সঙ্গে সীমান্তের ওপারে পাকিস্তানও যাতে পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য এ ধরনের একটি রাস্তা তৈরি করে দেয় সে ব্যাপারে পাক সরকারকে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানান, এই রাস্তা নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে সারা বছরই খুব সহজে পুণ্যার্থীরা কর্তারপুর যেতে পারবেন। পরে রাজনাথ সিং টুইট করেন, “কর্তারপুর করিডর প্রকল্পে পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য সব ধরনের আধুনিক ব্যবস্থার আয়োজন করা হবে। শুধু রাস্তা নয়, বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে। এই প্রকল্পের পুরো ব্যয় বহন করবে কেন্দ্র। পুণ্যার্থীদের জন্য ভারত-পাক সীমান্ত এলাকায় একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টেলিস্কোপ বসানো হবে। ওই টেলিস্কোপের সাহায্যে ভক্তরা সীমান্তের এপার থেকেই কর্তারপুর সাহিব দেখতে পাবেন। পাকিস্তানও যাতে তাদের সীমান্তের কাছে এ ধরনের একটি রাস্তা তৈরি করে সে ব্যাপারে ইমরান সরকারকে অনুরোধ করা হবে।” স্মার্ট সিটি প্রকল্পে ঐতিহাসিক শহর সুলতানপুর লোধিকে হেরিটেজ শহর হিসাবে গড়ে তোলা হবে বলেও রাজনাথ জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, আগস্টে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়ে কংগ্রেস নেতা তথা পাঞ্জাবের মন্ত্রী নভজ্যোৎ সিং সিধু কর্তারপুর সাহিবে ভারতীয়দের প্রবেশের জন্য অনুমতি দিতে পাকিস্তানকে অনুরোধ করেছিলেন। তাঁর ওই অনুরোধে সাড়া দিয়ে সেদেশের সেনাপ্রধান ওমর জাভেদ বাজওয়া কর্তারপুর সাহিবের রাস্তা খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলে সিধু জানান।
দিল্লির তৎপরতার প্রেক্ষিতে শিখ ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে কর্তারপুর সাহিবের রাস্তা খুলে দিতে সম্মত হল পাকিস্তান। পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মহম্মদ কুরেশি বৃহস্পতিবার এই কথা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে নানকের ৫৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এবার ৩৮০০ শিখ দর্শনার্থীকে ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাক হাই কমিশন। দু’টি বিশেষ ট্রেনে করে বৃহস্পতিবারই বেশ কিছু পুণ্যার্থী কর্তারপুরে পৌঁছে গিয়েছেন বলে খবর। সীমান্তের ওপারে পাকিস্তানের নারওয়াল জেলায় পড়ে কর্তারপুর সাহিব। শিখ ধর্মাবলম্বী মানুষ এই পবিত্রস্থানে যেতে বিশেষ উৎসাহী। কিন্তু যাত্রাপথ তেমন সুগম না হওয়ার ফলে তাঁদের সেই ইচ্ছাপূরণ কঠিন হয়ে ওঠে। সে কারণে পাঞ্জাবের গুরদাসপুর থেকে কর্তারপুর পর্যন্ত একটি রাস্তা নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। অবশেষে সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
[কাশ্মীরে বড় সাফল্য সেনার, জওয়ানদের গুলিতে খতম ৬ জঙ্গি]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.