সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিগত ৪৫ বছরের ইতিহাসে প্রাণহানির কুৎসিততম নজির গড়েছে গালওয়ান। পূর্ব লাদাখে ওই উপত্যকায় ভারতীয় ভূখণ্ড রক্ষা করতে গিয়ে ১৫ জুন চিনা বাহিনীর হামলায় শহিদ হয়েছেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। তারপর থেকেই লাগাতার আলোচনা চলছে দু’দেশের মধ্যে। তবে বিবাদ কিছুতেই মিটছে না। এখনও গালওয়ানে ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে লাল ফৌজ।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (LAC) আরও সংঘাত এড়াতে বুধবার ভারত ও চিনের মধ্যে মেজর জেনারেল স্তরে বৈঠক হয়। তবে চিনা বাহিনীর একগুঁয়ে মনোভাবের জন্য ভেস্তে যায় আলোচনা। সূত্রের খবর, পূর্ব লাদাখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বৃহস্পতিবার ফের বৈঠকে বসেছেন দুই দেশের সেনা কর্তারা। ১৫ জুনের সংঘর্ষ স্থলের পাশেই আলোচনা চলছে মেজর জেনারেল স্তরে। তবে আলোচনার মাধ্যমে কি সৈনিকদের সরিয়ে নিতে রাজি হবে বেজিং, তা সময়ই বলবে। যদিও বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহূর্তে গালওয়ান উপত্যকায় দু’দেশের মধ্যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা বদলাতে চাইছে চিন। এর জন্য ‘সালামি ট্যাক্টিক’ বা বারেবরে খুবলে মাংস (ভূখণ্ড) তুলে নেওয়ার পদ্ধতি ব্যবহার করছে লাল ফৌজ।
যদিও চিনের অভিসন্ধি এবার সফল হবে না বলেই মনে করছেন অনেকেই। প্রথাগত আলোচনার পথে থেকে সরে গিয়ে বুধবার চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ওয়েইক কড়া ভাষায় পরিস্থিতির কথা জানিয়েছে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। রাখঢাক না করে জয়শংকর সাফ বলেন, “পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে চিনা সেনা। মে মাসের আগে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর দু’দেশের ফৌজের যে অবস্থান ছিল সেই অবস্থানেই ফিরতে হবে”।
উল্লেখ্য, ১৬৫ জুনের রাতে গালওয়ানে পাথর ছুঁড়ে, কাঁটাতার পেঁচানো লোহার রড দিয়ে ভারতীয় সেনা জওয়ানদের উপর হামলা করে চিনা সৈনিকরা। শহিদ হন ২০ ভারতীয় জওয়ান। কে আগে হামলা চালিয়েছে, এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যেই চাপানউতোর রয়েছে। চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) গোটা ঘটনার দায় ১৬ নম্বর বিহার রেজিমেন্টের উপর চাপিয়েছে। জানা গিয়েছে, পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন অংশ থেকে সেনা সরাচ্ছিল দুই পক্ষই। চিন কোনও অজ্ঞাত কারণে গলওয়ান থেকে সেনা সরাতে চায়নি। এ নিয়ে এক ভারতীয় সেনা আধিকারিক চিনা সেনার সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তাঁর নেতৃত্বেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (LAC) ভারতীয় ভূখণ্ডে ১৪ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্টে চিনের তাবু ও নজরদারি পোস্ট ভেঙে দেওয়া হয়। এর চিনা সেনা আচমকা হামলা চালায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.