ছবি: ফাইল
দীপাঞ্জন মণ্ডল, নয়াদিল্লি: অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কায় জম্মু-কাশ্মীরের সম্পূর্ণভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে এবার শীর্ষ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ থাকার ফলে জরুরি পরিষেবায় তার ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। যা কাম্য নয় মোটেও। তাই হাসপাতাল, সরকারি ওয়েবসাইট, ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা প্রয়োজন। আজ কেন্দ্রকে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এনভি রামানা।
দ্বিতীয় মোদি সরকারের আমলে সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষলগ্নে গত বছরের আগস্ট মাসে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ও ৩৫(এ) ধারা প্রত্যাহার করা হয়। অশান্তি রুখতে ইন্টারনেট ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয় ভূস্বর্গে। তারপর থেকে কেটে গিয়েছে অনেকগুলো দিন। একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কাশ্মীরিদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টও। যা হচ্ছে সংস্থার নিয়ম মেনেই। কারণ, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারের নিয়ম অনুযায়ী, ১২০ দিন কোনও মেসেজ লেনদেন না হলে ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। উপত্যকায় ইন্টারনেট চালু করার দাবিতে সরব হয়েছেন একাধিক মানবাধিকার কর্মী থেকে সংগঠন। এমনকী মার্কিন কংগ্রেসের তরফেও ইন্টারনেট চালু করার প্রস্তাব পেশ করা হয়।
এবার এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ জানাল দেশের শীর্ষ আদালত। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এনভি রামানা এই সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণে জানান, স্বাধীনতা এবং সুরক্ষা – এই দুটি বিষয় পরস্পরবিরোধী। বিচারব্যবস্থার দায়িত্ব যে নাগরিককে সবরকম সুরক্ষা এবং অধিকার দেওয়া। ইন্টারনেট এই মুহূর্তে যোগাযোগ স্থাপনে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা নেয়। ভারতীয় সংবিধানের ১৯/ (১)/(এ) ধারা অনুযায়ী, এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা মানুষের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করে। সাময়িকভাবে এর ব্যবহার বন্ধ করা যায়, কিন্তু অনির্দিষ্টকালের জন্য যায় না। হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকের মতো জায়গায় ইন্টারনেটের অপব্যবহারের সুযোগ সবচেয়ে কম। তার উপর ভরসা রেখে এসব জায়গায় ইন্টারনেট যোগাযোগ চালু করে দেওয়া উচিত।পাশাপাশি তাঁর পরামর্শ, কাশ্মীর উপত্যকায় এই মুহূর্তে থাকা যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা যেন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুনর্বিবেচনা করা হয়।
এদিন বিচারপতি রামানা উপত্যকায় লাগু হওয়া সবকটি কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। যাতে জনসাধারণের কাছে তা স্পষ্ট আকারে থাকে এবং তাঁরা চাইলে সেই নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। আর সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণেই স্বস্তিতে কাশ্মীরবাসী। এতেই আশার আলো দেখছেন তাঁরা। হয়ত খুব দ্রুতই উপত্যকায় জনগণের জন্য ইন্টারনেট চালু হয়ে যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.