সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেরলের কান্নুর। গত তিন দশক ধরে আরএসএস এবং সিপিএমের রাজনৈতিক সংঘর্ষে এই জেলায় অন্তত ২০০ মানুষের প্রাণ গিয়েছে। ভিন্ন মতাদর্শের দুই সংগঠনের সদস্যরা একে অপরের ছায়া পর্যন্ত মাড়ান না। এই কান্নুরে এখন কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে সিপিএম (CPIM), আরএসএস (RSS)। সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কংগ্রেস সমর্থকরাও। লকডাউনের সময় সাধারণ মানুষের যাতে খাবার অভাব না হয়, তা নিশ্চিত করতে যৌথভাবে কমিউনিটি কিচেন চালাচ্ছেন এই তিন সংগঠনের সদস্যরা।
সিপিএম-আরএসএস-কংগ্রেসের (Congress) এই ঐক্যের ছবি সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে কান্নুরের থালাসেরি নামের উপকূলবর্তী শহরে। এই থালাসেরিই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের (Pinarayi Vijayan) বাসস্থান। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক কোদিয়ারি বালাকৃষ্ণণ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি মুরলিধরনও এখানেই থাকেন। মজার কথা হল করোনার দাপটের আগে এই এলাকায় ‘গ্রাম দখল’ নিয়ে আরএসএস এবং সিপিএমের মধ্যে বহু সংঘর্ষ হয়েছে। নিজেদের আধিপত্য যে গ্রামে বেশি, সেই গ্রামে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের ঢুকতে পর্যন্ত দেন না আরএসএস এবং সিপিএমের সদস্যরা। এখন এই থালাসেরিতেই একসঙ্গে দুঃস্থদের জন্য রান্না করছেন সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই (DYFI), আরএসএসের যুব সংগঠন সেবা ভারতী এবং যুব কংগ্রেসের কর্মীরা। জেলার সহকারী কালেক্টর আসিফ কে ইউসুফ এই তিন বিরোধী সংগঠনকে এক ছাতার তলায় এনেছেন। এদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের কাজও তিনিই করছেন।
থালাসেরির বিধায়ক এন শামসের বলছিলেন, “এটা রাজনীতি করার সময় নয়। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে সবাইকে একসাথে নিয়ে এই কমিউনিটি কিচেন চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য অভুক্তদের খাবার দেওয়া। পতাকার রং দেখার সময় এখন নয়।” স্থানীয় বিজেপি নেতা এমপি সুমেশ বললেন, “গরিবকে খাবার দেওয়া আমাদের জাতীয় কর্মসূচি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এই কঠিন সময়ে একে অপরকে সাহায্য করাই শ্রেয়।” নেটিজেনরা বলছেন কেরলের এই ঐক্যের ছবি দেশের অন্য রাজ্যের এবং রাজনৈতিক নেতাদের জন্য উদাহরণ হতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.