ছবি: প্রতীকী
সুব্রত বিশ্বাস: সুরক্ষার দায়িত্ব যার হাতে সেই সুরক্ষাকর্মীই গুলি চালিয়ে প্রাণ নিল তিনজন নিরীহ মানুষের। গুরুতর জখম আরও দু’জন। বর্তমানে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তাঁরা। মৃত ও জখম সবাই একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গিয়েছে। শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের রামগড় জেলার বরকাকানা রেল কলোনিতে। এই ঘটনার পর তীব্র চাঞ্চল্যের সঙ্গে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাজুড়ে।
গুলিতে মৃত্যু হয়েছে রেলের সাফাইকর্মী অলোক রাম, তাঁর স্ত্রী লীলাদেবী ও মেয়ে মীনা দেবীর। আর খুনি পবনকুমার সিং একজন আরপিএফ জওয়ান। খুনের পরই গা-ঢাকা দিয়েছে সে। তাঁর সন্ধানে বিভিন্ন এলাকায় নাকা তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। এদিকে শনিবার রাতের পর থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে আরপিএফের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন রেলকর্মীরা। এলাকা এতটাই উত্তপ্ত যে সামাল দিতে আরপিএফ কমান্ডান্ট হেমন্তকুমার ধানবাদ থেকে বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঝাড়খণ্ড পুলিশও পিকেটিং বসিয়েছে।
মৃত অলোক রামের এক মেয়ে সুমন দেবী আর ছেলে চিণ্টু রাম গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে ভরতি।জখম সুমনদেবী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, আরপিএফ কনস্টেবল পবনকুমার সিং তাঁদের কাছ থেকে গরুর দুধ কিনত। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে পয়সা না দেওয়ায় বাবা তাকে দুধ দেওয়া বন্ধ করে দেন। শনিবার রাত দশটা নাগাদ পবন এসে দুধ চাইলে অলোক রাম জানান, দুধ ফুরিয়ে গিয়েছে। একথা শুনে বচসা শুরু করে পবন। ঘরে ঢুকে লাথি মেরে জিনিসপত্র ভাঙতে থাকে। কোমর থেকে রিভলভার বের করে বাবা-মা ও তাঁদের তিন ভাইবোনকে গুলি করে। গুলির শব্দে ছুটে আসেন আশপাশের মানুষজন। তারপর প্রত্যেককে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে হাসপাতালে নিয়ে যান। আর এই সুযোগে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় পবন।
খবর পেয়ে বরকাকানা থানার পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করে। এদিকে ওইদিন রাত থেকেই নিরাপত্তাহীনতা ও আরপিএফ কর্মীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন রেলকর্মীরা। এই ঘটনার তদন্তকারী আধিকারিক এসডিপিও প্রকাশ চন্দ্র জানান, ওই জওয়ান রিভলভার থেকে না রাইফেল থেকে গুলি করেছে তা দেখা হচ্ছে। রিভলভার হলে সে আরপিএফ অফিসারের বডিগার্ড হবে।
বিক্ষোভকারী রেলকর্মীদের অভিযোগ, খনি অঞ্চলে মাফিয়াদের সঙ্গে সখ্য আরপিএফদের। পয়সার সঙ্গে সঙ্গে মস্তানি করা এদের স্বভাব। পত্রাতু, চৌপায়ন, বরকাখানা, গোমোতে মোটা টাকা দিয়ে আরপিএফদের পোস্টিং হয়। এ ধরনের অন্যায়ই প্রশ্রয় দেয় বড় অন্যায়কে। যার ফল এদিন দেখা গেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.