সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি হিসাবে সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৌরভ কৃপালের নাম সুপারিশ করেছে প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। গত ১১ নভেম্বর কলেজিয়ামের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানানো হয়। আগেও কৃপালের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর সঙ্গী একজন ইউরোপীয় এবং সুইজারল্যান্ডের দূতাবাসে কর্মরত বলে সম্ভাব্য স্বার্থ সংঘাতের অজুহাতে কেন্দ্রের তরফে একাধিকবার তাঁর নামে আপত্তি জানানো হয় বলে সূত্রের খবর। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও কলেজিয়ামের সদস্য বিচারপতি ইউ ইউ ললিত এবং বিচারপতি এ এম খানউইলকর। তিন সদস্যের এই কলেজিয়ামই হাই কোর্টের বিচারপতি নিয়োগে নাম সুপারিশ করে।
উল্লেখ্য, প্রায় তিন বছর আগে ২০১৮ সালে কলেজিয়াম প্রথম সৌরভ কৃপালের নাম বিচারপতি পদে সুপারিশ করেছিল। সে সময় সুপারিশ গ্রাহ্য হয়নি। কিছুদিন পর ফের বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলেজিয়াম। আইনি মহলে জল্পনা, সৌরভ কৃপাল প্রকাশ্যেই নিজেকে সমকামী বলে ঘোষণা করেছেন। সে কারণেই হয়তো পরবর্তী পর্যায়ে সুপারিশ করতে এই বিলম্ব। যদি কলেজিয়ামের সুপারিশ কেন্দ্র মেনে নেয়, তাহলে তিনিই হবেন দেশের প্রথম ঘোষিত সমকামী বিচারক। গত ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদকে চিঠি দিয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে। জবাবে ফের কৃপালের সঙ্গী ‘বিদেশি’ বলে আপত্তি জানিয়েছিল কেন্দ্র।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তল, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং রবীন্দ্র ভাটকে নিয়ে গঠিত তৎকালীন দিল্লি হাই কোর্টের কলেজিয়াম কৃপালের নাম সুপারিশ করেছিল। বিচারপতি মিত্তল ২০২০ সালের ডিসেম্বরে অবসর নিয়েছেন। বিচারপতি খান্না এবং বিচারপতি ভাট এখন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি। ঘটনাচক্রে কৃপালের বিষয়ে কলেজিয়াম সিদ্ধান্ত গ্রহণ পিছিয়ে দেওয়ার দু’দিন পর ২০১৮-র ৬ সেপ্টেম্বর ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। যে ধারায় সমকামকে অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হত।
ওই মামলায় আবেদনকারী নভতেজ জোহর ও ঋতু ডালমিয়ার আইনজীবী ছিলেন কৃপাল। এর আগে ২০১৯-এর জানুয়ারি, এপ্রিল এবং গত বছরের আগস্টে কৃপালকে নিয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখে কলেজিয়াম। তবে ১৯ মার্চ দিল্লি হাই কোর্টের ৩১ জন বিচারপতি সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসাবে পদোন্নতি দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করা কৃপাল দু’দশক ধরে পেশায় রয়েছেন। তাঁর বাবা বি এন কৃপাল ২০০২ সালে ছিলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.