সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিখর থেকে গভীর খাদে। দেশের ‘মোস্ট সেলিব্রেটেড ব্যাংকার’ আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিইও এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর চন্দা কোচারের কেরিয়ার এককথায় ব্যাখ্যা করলে এটাই বলতে হয়। ব্যাংকার হিসাবে খ্যাতির শীর্ষে উঠেছিলেন চন্দা কোচর। খুচরো ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে নয়া রূপ দেওয়ায় তাঁর অবদান আজও একবাক্যে মেনে নেন সবাই। বুধবার সেই আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের তরফে চন্দাকে বরখাস্ত করা হল।
দুর্নীতি করে ভিডিওকন কর্তা বেণুগোপাল ধূতকে ঋণ পাইয়ে দেওয়ায় অভিযুক্ত ছন্দার বিরুদ্ধে আইসিআইসিআই কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তিনি সংস্থার আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। সংস্থার স্বার্থ রক্ষার যেসমস্ত নিয়ম নীতি রয়েছে, তা-ও লঙ্ঘন করেছেন। চন্দার বিরুদ্ধে ওঠা ঋণ দুর্নীতির অভিযোগের জেরে সংস্থার তরফেই বিচারপতি বি এন কৃষ্ণের নেতৃত্বে তদন্ত হয়েছিল। আইসিআইসিআই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিচারপতি কৃষ্ণর রিপোর্টের ভিত্তিতে চন্দার পদত্যাগপত্রকে গ্রহণ না করে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চন্দার এই চলে যাওয়াকে ‘টার্মিনেশন ফর কজ’ বলে ধরা হবে। চন্দাকে বরখাস্ত করার ফলে, এতদিন অবসরকালীন যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা তিনি ব্যাংকের তরফে পাচ্ছিলেন, তার কোনওটিই আর পাবেন না। ইনক্রিমেন্ট, বোনাস, চিকিৎসাগত সুবিধা এবং তাঁর নামে যে শেয়ার ছিল, সে সবকিছুই বাতিল করা হয়েছে আইসিআইসিআই কর্তৃপক্ষের তরফে। সেই সঙ্গে ২০০৯-এর এপ্রিল থেকে ২০১৮-এর মার্চ মাস পর্যন্ত যে বোনাস তাঁকে ব্যাংকের তরফে দেওয়া হয়েছিল, তাও ফেরাতে হবে চন্দাকে।
নিজের পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ম নীতি লঙ্ঘন করে ব্যক্তিগত সুবিধার বিনিময়ে ভিডিওকন সংস্থাকে বিপুল অঙ্কের ঋণ পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ চন্দার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ২০১৮ সালের মার্চ মাসে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই। তারা জানায় ওই ঋণ অনুমোদিত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই চন্দার স্বামীর নিউ পাওয়ার রিনিউয়েবলে বিনিয়োগ করেন ভিডিওকন কর্তা বেণুগোপাল ধূত। সম্প্রতিই নিউপাওয়ার রিনিউএবেল প্রাইভেট লিমিটেড (এনআরপিএল)-এর মালিক তথা চন্দার স্বামী দীপক কোচার এবং ভিডিওকন গোষ্ঠীর বেণুগোপাল ধুতের মধ্যে অবৈধ আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত অভিযোগ নথিভুক্ত করছে সিবিআই। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ এবং বিচারপতি কৃষ্ণর রিপোর্ট ছন্দা ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের এফআইআরের সিদ্ধান্তকে সিলমোহর দিল বলে শিল্পমহলের অভিমত। চন্দা অবশ্য আইসিআইসিআই কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে বলেছেন, “এই ঘটনায় আমি ব্যথিত, দুঃখিত ও হতাশ। ব্যাংকের কোনও সিদ্ধান্তই এককভাবে নিতাম না। আমাকে রিপোর্টের কোনও কপিও দেওয়া হয়নি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.