সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চন্দু বাবুলাল চহ্বন। ২২ বছরের এই ভারতীয় সেনা জওয়ানকে সম্প্রতি প্রত্যর্পণ করে পাক সেনা। কিন্তু গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি লঞ্চপ্যাডে ভারতীয় সেনার সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সময় জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করে ফেলেছিলেন এই মহারাষ্ট্রের জওয়ান। সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়েছিলেন তিনি।
ব্যস! তারপর দীর্ঘ চার মাস প্রত্যেকটা দিন বিভীষিকার মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছিলেন তিনি। পাক সেনার হাতে বন্দি হয়ে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুকামনা করতেন তিনি। মাসখানেক আগে ধুলে জেলায় নিজের গ্রাম বরবিহিরে ফিরেছেন তিনি। সম্প্রতি একটি মারাঠি চ্যানেলে নিজের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁপে উঠেছিলেন প্রায়। কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টরে পোস্টিং ছিল তাঁর। কোনওভাবে পাক ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েন তিনি। সেই অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে জানান, পাক সেনা তাঁকে সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে তল্লাশি চালায়। তারপর কালো কাপড় দিয়ে তাঁর গোটা শরীর মুড়ে একটি গাড়িতে করে সীমান্ত এলাকা থেকে নিয়ে যায় তারা।
তারপর কী হয়েছিল? চ্যানেলের অনুষ্ঠানে কৌতূহলী প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলতে থাকেন, তাঁকে একটি ঘরে কয়েদ করে রাখা হয়েছিল। সারাক্ষণ সেই ঘরটা অন্ধকারই থাকত। ওই ঘরের মধ্যেই শৌচ-স্নান করার জায়গা ছিল। অন্ধকার থাকায় কিছুই বুঝতে পারতেন না চন্দু। সহ্য করতে না পেরে দেওয়ালে নিজের মাথা সজোরে ঠুকে পাক সেনার কাছে মৃত্যুকামনা করতেন। তাদেরকে বলতেন, তাঁকে যেন মেরে ফেলে তারা। কিন্তু তার বদলে ইঞ্জেকশন ফুটিয়ে আচ্ছন্ন করে রাখা হত। পাক সেনা তাঁকে দিনরাত বেধড়ক মারধর করত বলে জানিয়েছেন তিনি। একটা সময় আসে যখন তাঁর চোখের জল শুকিয়ে গিয়েছিল বলে জানান তিনি।
‘দিন না রাত কিছুই বুঝতে পারতাম না। তখন শুধু পরিবারের কথা মনে পড়ত। ঈশ্বরের কাছে তখন শুধুই মৃত্যুকামনা করতাম।’ বলতে বলতে চোখ ছলছল করে ওঠে ওই জওয়ানের। পাকিস্তানি সেনার অত্যাচার বর্ণনা করতে গিয়ে চন্দু বলেন, ‘রোজ ওরা আমাকে ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুমের ওষুধ দিত। কান দিয়ে মাঝেমধ্যেই রক্ত পড়ত, তখন ওরা আমার কানে একটা ড্রপ দিত। আমাকে মারধর করার সময় ওরা বলত, আমি না কি উরি হামলার বদলা নিতে পাকিস্তানে ঢুকেছি।’ স্বভাবতই ওই বীর সেনানি এত অত্যাচার সহ্য শেষপর্যন্ত বেঁচে ফিরেছে, এতেই শান্তি তাঁর পরিবারের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.