সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একেই বোধহয় বলে মরার উপর খাঁড়ার ঘা। অ্যাপেনডিক্সের যন্ত্রণায় কাতর লকডাউনে ভিনরাজ্যে আটকে পড়া যুবক। চিকিৎসার টাকাও নেই। এই অবস্থাতে সাহায্যের হাত বাড়ালেন পুলিশকর্মী। নিজের পকেট থেকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে ওই যুবককে সুস্থ করে তুললেন তিনি। পুলিশকর্মীর মানবিকতার প্রশংসা করছেন সকলেই। চিঠি লিখেন তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হিমাচলপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
হিমাচলপ্রদেশের বাসিন্দা যুবক। কিন্তু লকডাউনের মাঝে হায়দরাবাদে আটকে পড়েন। মাঝেমধ্যে পেটে যন্ত্রণা হত যুবকের। অ্যাপেনডিক্সের কারণে যন্ত্রণা তা বুঝতে পারেননি তিনি। কিন্তু লকডাউনে ভিনরাজ্যে আটকে পড়া অবস্থায় যন্ত্রণা যেন বাড়ল কয়েকগুণ। হাঁটাচলার ক্ষমতাও তখন আর নেই তাঁর। দিনটা ছিল ১৬ এপ্রিল। কোভিড ১৯ কন্ট্রোল রুমে ফোন আসে। সেখানেই ওই যুবকের শারীরিক অবস্থার কথা জানানো হয়। ওই কন্ট্রোল রুম থেকে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কুকটপল্লি থানায় ফোন যায়। পুলিশকর্মী লক্ষ্মীনারায়ণ রেড্ডি ফোন ধরেন। তিনি শোনামাত্রই ওই যুবকের কাছে যান। একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা যায় অ্যাপেনডিক্সের জন্য যন্ত্রণা হচ্ছে। চিকিৎসার খরচ বাবদ লাগবে প্রায় ২০ হাজার টাকা। একথা শোনামাত্রই অসুস্থ যুবকের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। লকডাউনে ভিনরাজ্যে আটকে পড়া যুবকের কাছে খাবার জোগানের সংস্থানই নেই। এত টাকা আসবে কোথা থেকে?
পুলিশকর্মী বিপদে দেবদূত হয়ে পাশে দাঁড়ান। নিজের পকেট থেকে বের করে ২০ হাজার টাকা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে দেন তিনি। চিকিৎসার খরচ দিতে দেখে অবাক হয়ে যায় যুবক। একজন পুলিশকর্মী নিজের থেকে সুস্থ হওয়ার জন্য টাকা দেবেন, তা যেন ভাবতেই পারেননি তিনি। পুলিশকর্মী লক্ষ্মীনারায়ণ রেড্ডি বলেন, “আমি নিজে কিছুই করিনি। শুধুমাত্র পুলিশ কমিশনার ভিসি সজ্জনরের কথা মতো কাজ করেছি। উনি প্রতিটা মিটিংয়ে বলেছেন এ রাজ্যে যাঁরা বর্তমানে রয়েছেন তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে। আমি সেই মতো অসুস্থ ওই যুবকের পাশে দাঁড়িয়েছে।” পুলিশকর্মীর মানবিকতা মন ছুঁয়েছে হিমাচলপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুরেরও। তিনি চিঠি পাঠিয়ে লক্ষ্মীনারায়ণ রেড্ডিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পুলিশ কমিশনারও রেড্ডির কাজের প্রশংসা করেন। প্রত্যেক পুলিশকর্মীকে বিপদের দিনে এভাবেই দুর্গতদের পাশে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.