সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজাদির অমৃত মহোৎসবে বিলকিস বানোর (Bilkis Bano) ১১ ধর্ষককে মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার (Gujarat Government)। যা নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রবিবার এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিলকিসের স্বামী ইয়াকুব রসুল বললেন, ন্যায়বিচারের জন্য ১৮ বছরের যুদ্ধ ব্যর্থতায় পরিণত হল। ধর্ষকদের নিয়েও যে মাতামাতি হতে পারে, তা তাঁর সুদূর কল্পনাতেও ছিল না।
২০০২ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে গণধর্ষিতা হন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস বানো (Bilkis Bano Gang Rape)। সেদিন তাঁর তিন বছরের মেয়েকে আছড়ে মারা হয়। ওই ঘটনায় ‘খুন’ হয়েছিলেন বিলকিসের পরিবারের ৮ জন। ঘটনায় অভিযুক্ত ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ২০০৮ সালে। সেই অপরাধীদের দেশের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনা চমকে দেওয়ার মতো বটেই। তবে এর চেয়েও জবর খবর, ওই ১১ জন সম্মানিত ও প্রশংসিত হচ্ছেন। জেল থেকে বেরনোর পরই দোষীদের বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মালা পরিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ধর্ষকদের গলায় মালা, মুখে মিষ্টির ছবি প্রকাশ্যে আসার পর বিতর্ক দানা বাধে। এখনেই শেষ নয়, গোধরার বিজেপি বিধায়ক সিকে রাউজি বলেন, ধর্ষকদের ‘স্বভাব-চরিত্র ভাল’। এই সমস্ত কাণ্ড দেখে হতবাক বিলকিসের স্বামী।
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ইয়াকুব রসুল জানান, গোটা ঘটনায় বিলকিস এতটাই অবাক যে এই বিষয়ে সে কথাই বলছে না। তাঁরা সংবর্ধিত হওয়া ধর্ষকদের ছবি দেখেছেন, জানান বিলকিসের স্বামী। বলেন, “এমনটা যে হয়েছে প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। পরে জানলাম, এটাই সত্যি।” বছর ৪৫-এর ইয়াকুবের কথায়, “সরকারের এই সিদ্ধান্ত আমাদের ১৮ বছরের লড়াইকে এক নিমেষে মিথ্যে করে দিল। গত দু’দশকে একের পর এক আদালতে ছুটেছি আমরা।” বলেন, “দেখে মনে হচ্ছে ধর্ষকরা যেন নায়ক!”
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট ৫০ লক্ষ টাকা এবং সরকারি চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেয় বিলকিস বানো মামলায়। ইয়াকুব বলেন, “সবে নিজেদের গুছিয়ে নিচ্ছিলাম। তখনই ঝটকা।” গোটা ঘটনায় ভীত ও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন সংবাদমাধ্যমকে জানালেন ইয়াকুব। বলেন, “এক জন দোষীও যখন প্যারোলে ছাড়া পেত, ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতাম আমরা। ১১ জনের মুক্তির পর আমাদের মনের অবস্থা কেমন, বুঝে নিন আপনারা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.