প্রতীকী ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল: কোনও স্বামীই তাঁর স্ত্রীর উপর জোর খাটাতে পারেন না। জোর খাটাতে পারেন না তাঁদের দাম্পত্য সম্পর্কের অধিকার কায়েম করার জন্যও। এমনকী আদালতের পরোয়ানা দেখিয়েও তা করা যায় না। যুগান্তকারী এই নির্দেশ গুজরাট হাই কোর্টের (Gujarat High Court), যা একবার ফের নারী অধিকারের পক্ষেই কথা বলল। সেই সঙ্গে আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে ভারতীয় আইনেই রয়েছে, স্বামী কখনওই স্ত্রীকে যৌন মিলনে (physical intimacy) বাধ্য করতে পারেন না। এবং এর মাধ্যমে বৈবাহিক অধিকারও প্রমাণ করতে পারেন না।
কোন মামলায় এমন মন্তব্য আদালতের? জানা যাচ্ছে, গুজরাটের বনসকন্থার এক নার্স বেশ কিছুদিন আগে তাঁর স্বামীর বাড়ি ছেড়ে নিজের বাবা-মায়ের কাছে থাকতে চলে যান। ২০১৫ সালে ওই দম্পতির বিয়ে হয়। এবং তাঁদের একটি সন্তানও রয়েছে। এরপরই ওই নার্স তাঁর বাবা-মায়ের কাছে থাকতে চলে যান। তাঁর অভিযোগ, স্বামীর কাছে তাঁকে নানাভাবে হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি তাঁর উপর জোর করছিলেন স্বামীর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস করার জন্য। কিন্তু ওই নার্স সেই প্রস্তাবে সম্মত ছিলেন না। এ ব্যাপারে স্বামীর সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
এর কিছুদিন পরেই তাঁর স্বামী পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হন। পালানপুরের আদালতে ওই নার্সের স্বামী ‘দাম্পত্য অধিকার’ পুনঃস্থাপনের দাবি জানান, যাতে তাঁর স্ত্রী সঙ্গে থাকতে বাধ্য হন। পারিবারিক আদালতও স্বামীর আরজিতেই সাড়া দেয় এবং ওই নার্সকে স্বামীর কাছে ফিরে যেতে বলে।
কিন্তু ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পালটা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন নার্স। হাই কোর্ট পুরনো নির্দেশটি খারিজ করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে জানিয়েছে, কোনও ভাবেই কোনও স্ত্রীর উপর তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর খাটানো যায় না। আদালতের নির্দেশও কখনওই বাধ্য করতে পারে না কোনও স্ত্রীকে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও কাজ করতে।
বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি নিরল মেহতাকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ জানায়, দুই ইসলাম ধর্মাবলম্বীর মধ্যে বিবাহ একটি সামাজিক চুক্তি। সে ক্ষেত্রে দাম্পত্য অধিকার ফিরে পাওয়ার দাবি জানানোর অর্থ জোর খাটানো যা চুক্তিভঙ্গেরই শামিল। সিভিল প্রসিডিওর কোড উদ্ধৃত করে আদালত জানায়, “কোনও ব্যক্তিই কোনও মহিলা বা নিজের স্ত্রীর উপর জোর খাটাতে পারেন না। স্ত্রী যদি একসঙ্গে বসবাস করতে না চান তাবে তাঁকে কোনও আদালতের নির্দেশও তা করতে বাধ্য করতে পারে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.