Advertisement
Advertisement

Breaking News

BJP

কোটি টাকা তছরূপে অভিযুক্ত বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতা! শাহ-নাড্ডাদের ইমেলে ফাঁস ‘কেলেঙ্কারি’

গত দু’বছরে ওই নেতা কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন বলে অভিযোগ। এনিয়ে শোরগোল বিজেপিতে।

Huge asset allegedly made by one leader of Bengal BJP, emails sent to Amit Shah and JP Nadda
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 20, 2025 3:43 pm
  • Updated:April 20, 2025 3:43 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো, নয়াদিল্লি: ক্ষমতার অব্যবহার করে দলীয় তহবিল নয়ছয়-সহ তোলাবাজির একাধিক অভিযোগ বঙ্গ বিজেপির এক শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে। দু’বছরে মধ্যে বিজেপির ওই নেতা নামে বেনামে কোটি কোটি টাকার বিপুল সম্পতি করেছেন বলে তথ্য দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, সাংগাঠনিক সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষ ও রাজ্যের পর্যবেক্ষক সুনীল বনসলের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন দলেরই একাংশ। মেল করে যে অভিযোগপত্রটি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে দেওয়া হয়েছে সেটি ফাঁস হওয়ার পরেই বঙ্গ বিজেপির অন্দরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআই তদন্ত দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ জানান, ”ভুয়ো বুথ দেখিয়ে, মিথ‌্যা কাঠামো দেখিয়ে তার বিনিময়ে টাকা নিয়েছে বিজেপির এক নেতা। সেই তথ‌্য, বুথের তালিকা, তার নাম সবটা ইমেল করে দলেরই একটা তরফে পাঠানো হয়েছে সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা, সুনীল বনসল আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তিনি গুরুত্বপূর্ণ এক পদাধিকারী। তিনি পদ দিয়েছেন টাকার বিনিময়ে। তাতে বিপুল সম্পত্তি করেছেন। এই তথ‌্য ইডি, সিবিআইকে দেওয়া হোক। না হলে আমরা সেই তথ‌্য পাঠাবে। তার আগে এই তথ‌্য আমি ডিজি রাজীব কুমার আর সিআইডিকে পাঠাচ্ছি। যাঁর নামে এই অভিযোগ, বীরভূমে তিনি বিপুল সম্পত্তি করেছেন।”

Advertisement

গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেন চট্টোপাধ্যায় ‘উপাধি’ধারী ওই বিজেপি নেতা। বীরভূমের একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। এরপরেই আরএসএসের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় দলের শীর্ষপদে বসান হয় তাঁকে। অভিযোগ, দলের চেয়ারে বসার পর থেকেই বিভিন্নভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুরনো নেতা-কর্মীদের উপর ছড়ি ঘোরাতে শুরু করেন তিনি। রাজ্যস্তরে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়লেও কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি রাজ্য নেতৃত্ব। এবার ইমেল মারফত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে পাঠান অভিযোগপত্রটি ফাঁস হতেই মারাত্মক সব তথ্য প্রকাশ্যে আসে। যদিও তথ্যের সত্যতা যাচাই করেনি ‘সংবাদ প্রতিদিন’।

অভিযোগের সত্যতা প্রমাণে যে সরকারি নথি অমিত শাহ ও জে পি নাড্ডাদের কাছে পাঠানো হয়েছে, তা মারাত্মক অভিযোগের প্রমাণ। অভিযোগে জানানো হয়েছে, গত দু’বছরে তিনি কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি করেছেন। সম্পত্তির অধিকাংশ বৃদ্ধ বাবা, মা, ভাই ও শ্যালিকার নামে। বেশিরভাগই আবার বীরভূমে। তবে কলকাতাতেও তিনি সম্পত্তি করেছেন বলে নথিতে প্রকাশ। অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, নিউটাউনের বিশ্ব বাংলা সরণিতে ৪ কোটি টাকারও বেশি মূল্য দিয়ে শ্যালিকার নামে ফ্ল্যাট কিনেছেন। অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশের আগে মা, বাবা, ভাই এবং শ্যালিকারা কোনও উল্লেখযোগ্য সম্পদের মালিক ছিলেন না। বিশ্ব বাংলা সরণির এক হাইরাইজ বিল্ডিংয়ে অষ্টম তলায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের একটি আচ্ছাদিত গ্যারেজ-সহ একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন ওই বিজেপি নেতার শ্যালিকা।

তিনি অভিযোগ এড়াতে তিনি নিজের নামে সম্পত্তি কেনেননি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাছাড়া, নির্বাচনের সময় পঞ্চায়েত, পৌরসভা, অথবা উপনির্বাচন যাই হোক না কেন তার দলের তরফে দায়িত্বে থাকা প্রভাবশালী কিছু জেলা সভাপতির সাথে যোগসাজশে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ। গত ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় নির্বাচনী সহ-প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় ভুয়া বুথ কমিটি দেখিয়ে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করেন। অভিযোগ, বুথ প্রতি দলের তরফে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। জেলা সভাপতি ও ক্লাস্টার ইনচার্জদের সঙ্গে যোগসাজশ করে লোকসভা পিছু অতিরিক্ত বুথ দেখিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা দলীয় তহবিল তছরুপ করেন। ওনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রদানের বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করে। ওই ব্যক্তি, উচ্চ পর্যায়ের কিছু অভিযোগে লেখা হয়েছে ওই নেতা রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকে সমর্থন পাচ্ছেন। তাঁদের মদতে রাজ্যের দুর্নীতিগ্রস্ত ওই নেতার বাড়বাড়ন্ত বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গোটা বিষয়টি দলীয়স্তরে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন অভিযোগকারী।

শীর্ষ নেতৃত্বকে পাঠান ইমেলটি ফাঁস হওয়ার পরেই তোপ দেগেছে তৃণমূল। কুণাল ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “বিস্ফোরক দুর্নীতির অভিযোগ এটা। একজন ব‌্যক্তির দুই বছরে এত সম্পত্তি হয় কী করে? বিজেপির ভিতরেই এ নিয়ে ইমেল, অভিযোগ চালাচালি হচ্ছে। আর্থিক দুর্নীতির মামলায় যদি এক চ‌্যাটার্জি পদবির সাজা হয়, তাহলে আরেক চ‌্যাটার্জি পদবির বিরুদ্ধে কেন তদন্ত হবে না? যিনি প্রথম অভিযোগ করেছেন, তাঁকে আগে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হোক। আজ নাম বলিনি। কিন্তু প্রয়োজনে কাল নাম বলব।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement