সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথমবার ভারত সফরে এসেছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি। যে সময়টা কর্তা তথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট, এদেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে ব্যস্ত থাকবেন, ততক্ষণ সময় কাটাতে তাঁর ঘরনি চলে যাবেন দিল্লির একটি স্কুলে। জটিল-কুটিল সামরিক, কূটনৈতিক তত্ত্বের গুরুগম্ভীর আলোচনার আবহ থেকে বেরিয়ে তিনি কিছুক্ষণ কাটাবেন ফুরফুরে মেজাজে, খুদে পড়ুয়াদের সঙ্গে। যার পোশাকি নাম ছিল – হ্যাপিনেস ক্লাস। তবে ট্রাম্প দম্পতির এই সফরের মাঝেই দিল্লি যেভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে, তাতে মেলানিয়ার এই কর্মসূচি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। তাই তো নিরাপত্তার বজ্র আঁটুনি ছিল এই সফর ঘিরে।
অশান্তির জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় উত্তর-পূর্ব দিল্লির জাফরাবাদ, ব্রহ্মপুরী, গোকুলপুরীর স্কুলগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে বিপরীত মেরু, দক্ষিণ দিল্লির নানকপুরীর সর্বোদয় কো-এডুকেশন স্কুলে তার প্রভাব পড়েনি। মসৃণ ছিল মেলানিয়ার যাওয়ার পথ। তিনি গেলেন, দিলেন হাসিখুশি থাকার পাঠও।
একটু বেশিই সক্রিয় দেখা গেল মেলানিয়া ট্রাম্পকে। সবমিলিয়ে, ঘণ্টাখানেক সর্বোদয় কো-এডুকেশন স্কুলে বেশ ভালই সময় কাটালেন তিনি। আর তাঁকে কাছে পেয়ে খুদেদেরও উদ্দীপনার অন্ত নেই। নাচেগানে বিদেশি অতিথির মনোরঞ্জন করে, তাঁর হাতে তুলে দিলেন উপহারের ডালি।
মঙ্গলবার ঘড়ির কাঁটা তখন দুপুর ১২টাও ছোঁয়নি। হায়দারাবাদ হাউসে মোদির উষ্ণ অভ্যর্থনা গ্রহণ করার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চলে যান বৈঠকের জন্য। আর স্ত্রী মেলানিয়া গাড়ি নিয়ে সোজা চলে আসেন নানকপুরা অঞ্চলের সর্বোদয় কো-এডুকেশন স্কুলে। গাড়ি থেকে নামতেই তাঁকে স্বাগত জানানোর পালা শুরু করে খুদেরা। আজকের বিশেষ অতিথির জন্য তারা নিজেরাও বিশেষ সাজে এসেছিল। কারও পরনে সবুজ-হলুদ ঘাগরা, কারও ঘন গোলাপি। রাস্তাতেই তারা ফুলের স্তবক তুলে দিয়েছে খুদেরা। তিনিও বাচ্চাদের কাছে টেনে নেন।
স্কুলের ভিতরে ঢুকে আরও চমক। ফুল, মালা, চন্দন, সিঁদুরে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে বরণ করে নিতে হাজির ছিলেন শিক্ষিকারাও। বিদেশি অতিথি এসেছেন বলে পড়াশোনায় ছুটি মোটেও ছিল না। তাই ক্লাসরুমে ঢুকে মেলানিয়া পুঙ্খানুপুঙ্খ দেখে নিলেন ছোটদের পাঠদানের পদ্ধতি। তাঁকে সামনে রেখেই পড়ালেন দিদিমনিরা। মেলানিয়াও মন দিয়ে শুনলেন ক্লাস, দেখলেন ছোটদের পড়াশোনা।
ক্লাস শেষে মার্কিন ফার্স্ট লেডিকে নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের চলে এল সোজা স্কুলের প্রাঙ্গণে। সেখানেই শুরু হয় সাংস্কৃতিক উৎসব। কেউ ভাঙড়া নেচে, কেউ গান গেয়ে মন বিদেশিনীর মন কাড়তে চাইল। তিনিও উৎসাহ দিলেন সকলকে। কারও মাথায় হাত বুলিয়ে, কাউকে জড়িয়ে বোঝালেন, ছোটরা তাঁর বড়ই প্রিয়।
কিন্তু এত আনন্দে সময় কাটানোর পরও ছোট পডুয়াদের হাসিখুশি থাকার পাঠ কতটা দিতে পারলেন, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। নিন্দুকরা বলছেন, রাজধানীর একটা প্রান্ত জ্বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরকালীনও যে উত্তাপ এতটুকুও কমল না, সেখানে কতটা সাড়া ফেলল মেলানিয়ার ‘হ্যাপিনেস ক্লাস’? প্রশ্নটা থাকছেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.