সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রান্নায় নুন বেশি হওয়ার মতো তুচ্ছ কারণও মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে! হ্যাঁ, বাস্তবে তেমনটাই ঘটেছে। ভুল করে ফ্রাইড রাইসে নুন বেশি দিয়েছিলেন রেস্তরাঁর রাঁধুনি। মধ্যাহ্নভোজ সেরেই সুন্দরী বৈসরন উপত্যকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল কেরলের ১১ সদস্যের একটি পরিবারের। ভাগ্যিস নুন বেশি দিয়েছিলেন রাঁধুনি! তাতেই ঘণ্টাখানেক দেরি এবং প্রাণ বেঁচে গেল গোটা পরিবার। নচেত পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বাড়ত।
অ্য়ালবে জর্জ কেরলের কুন্নুরের বাসিন্দা। স্ত্রী, সন্তান, বৃদ্ধ মা-বাবা-সহ ১১ জন আত্মীয় মিলে ভূস্বর্গে বেড়াতে এসেছিলেন। ১৯ তারিখ তাঁরা শ্রীনগর পৌঁছান। দিন দুয়েক গুলমার্গ-সোনমার্গে ঘুরে মঙ্গলবার শ্রীনগর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে পহেলগাঁওয়ে পৌঁছন তাঁরা। পহেলগাঁওয়ের গিয়ে ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ বৈসারণে যাবেন না, তা তো হতে পারে না। তবে দুপুরে বৈসরন উপত্যকায় যাওয়ার পথে পেট ভরে খেয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
বৈসরন থেকে ১৫ মিনিটের দূরত্বে একটি রেস্তরাঁয় খেতে ঢোকেন অ্যালবে এবং তাঁর পরিবার। রেস্তরাঁয় ফ্রায়েড রাইস অর্ডার করেছিলেন তাঁরা। খাবার খেতে গিয়ে দেখেন ফ্রায়েড রাইসে অত্যাধিক নুন বেশি। বিষয়টি রেস্তরাঁ মালিককে জানালে তিনি ভুল বুঝতে পেরে নতুন করে খাবার বানিয়ে দেন। এতেই ঘণ্টাখানেক দেরি হয়ে যায়।
এই সময়ের মধ্যেই জঙ্গি হামলা হয়ে গিয়েছে মিনি সুইজারল্যান্ড বলে খ্যাত বৈসরনে। বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের খুন করেছে পাঁচ-ছয় জন পাক জঙ্গি। এক স্থানীয় বাসিন্দা-সহ ঝরে গিয়েছে ছাব্বিশটি প্রাণ। কিছুই জানা ছিল না অ্য়ালবে এবং তাঁর পরিবারের। বৈসরনের কাছাকাছি পৌঁছোতেই তাঁরা দেখেন, চারিদিকে লোকজন ছুটোছুটি করছেন। বুঝতে পেরেছিলেন ওঁরা, কিছু একটা ঘটেছে! থমথমে পরিবেশ, দ্রুত দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাওয়া দেখে তড়িঘড়ি ফেরার পথ ধরে পরিবারটি। দোকানিরাও হোটেলে ফিরে যেতে বলেন তাঁদের।
হোটেলের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছতেই বাড়ি থেকে ফোন আসে। তাতেই জানতে পারেন কী ভয়ানক কাণ্ড ঘটে গিয়েছে বৈসরনে। কীভাবে জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছে তাঁদেরই মতো নিরীহ পর্যটকদের। আঁতকে ওঠেন ওঁরা। যদিও এযাত্রায় অ্যালবে জর্জ-সহ তাঁর পরিবারের ১১ সদস্য বেঁচে গিয়েছেন। শুধুমাত্র ফ্রাইড রাইসে নুন বেশি হওয়ার কারণে। ভাগ্যিস!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.