সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ বাম বুদ্ধিজীবীকে নিজেদের ঘরেই নজরবন্দি রাখার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ভীমা-কোরেগাঁও কাণ্ডে মাওবাদীদের যোগ রয়েছে। এই অভিযোগে পাঁচ বামপন্থী বুদ্ধিজীবীকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তার প্রতিবাদে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতে এমনই নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ। মামলার পরবর্তী শুনানি ৬ সেপ্টেম্বর। ততদিন পর্যন্ত বুদ্ধিজীবীদের বাড়িতেই থাকতে হবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
বাম বুদ্ধিজীবীদের গ্রেপ্তারের পর সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন ঐতিহাসিক রোমিলা থাপার, অর্থনীতিবিদ প্রভাত পট্টনায়েক, দেবকী জৈন, সমাজতত্ত্ববিদ সতীশ দেশপাণ্ডে, লেখক মায়া দারুওয়ালার মতো বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা। ভারভারা রাও, সুধা ভরদ্বাজদের গ্রেপ্তারে স্থগিতাদেশ চেয়েছিলেন তাঁরা। তাতে সম্মত হয়নি শীর্ষ আদালত। এদিকে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বুধবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই গ্রেপ্তারির বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চে বিকেলে শুনানি শুরু হয়। যা চলে প্রায় আধ ঘন্টা। দু’পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার পর সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ধৃত বাম বুদ্ধিজীবীদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া যাবে না। তাঁদের বাড়িতেই নজরদারিতে রাখা যেতে পারে। গৃহবন্দি থাকার সময়ে তাঁদের সঙ্গে বাইরের কেউ দেখা করতে পারবেন না। বা তাঁরাও বাইরের কারও সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। পাশাপাশি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরকার পক্ষকে লিখিত আকারে গ্রেপ্তারির কারণ ও পদ্ধতি সম্পর্কে আদালতে বিশদ রিপোর্ট দিতে হবে।
[ উপত্যকায় ফের গুলি বিনিময়, নিরাপত্তারক্ষীদের জালে ৩ জঙ্গি ]
আদালত জানিয়েছে, গণতন্ত্রে প্রতিবাদী কন্ঠস্বর থাকতে হবে। অন্যথায় গণতন্ত্রের কাঠামো ভেঙে পড়তে পারে। শুনানি চলাকালীন দু’পক্ষের আইনজীবীদের তুমুল বাগ্বিতণ্ডার মধ্যে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “ভিন্নমত গণতন্ত্রের সেফটি ভাল্ভ। যদি ভিন্নমত গ্রাহ্য না করা হয়, তাহলে প্রেসার কুকার ফেটেও যেতে পারে।” বাম বুদ্ধিজীবীদের তরফে আইনজীবী ছিলেন অভিষেক মনু সিংভি, প্রশান্ত ভূষণ, ইন্দিরা জয় সিং, রাজীব ধাওয়ান, দুষ্মন্ত দাভেরা। ভীমা-কোরেগাঁও মামলার এফআইআরে নাম না থাকা সত্ত্বেও কেন পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সিংভি। ধৃতদের গৃহবন্দি করেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক বলেও এদিন দাবি করেন তিনি। পাল্টা মহারাষ্ট্র সরকারের আইনজীবী অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা প্রশ্ন তোলেন, এই মামলার সঙ্গে যাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই তাঁরা কেন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন। যদিও আদালত এদিন সিংভির দাবিকেই মান্যতা দিয়েছে।
মঙ্গলবার পুনে পুলিশ দেশের নানা প্রান্তে হানা দিয়ে বিশিষ্ট কবি, সমাজকর্মী ও বামপন্থী চিন্তাবিদ ভারভারা রাও-সহ সুধা ভরদ্বাজ, অরুণ ফেরেরা, ভের্নন গঞ্জালভেস এবং অরুণ নওলাখাকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে ভীমা-কোরেগাঁও হিংসায় জড়িত থাকার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকা এবং মাওবাদীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার অভিযোগ করা হয়েছে।
[ ভারতীয় রেলে মধুবনী শিল্পের ছোঁয়া, প্রশংসায় পঞ্চমুখ রাষ্ট্রসংঘ ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.