সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তালাক-এ-বিদ্দত বা তাৎক্ষণিক তালাককে অসংবিধানিক ঘোষণা করেছে শীর্ষ আদালত। মুসলিম মহিলা সমাজ নৈতিক জয় হিসেবেই দেখেছে এই রায়কে। হয়েছে মিষ্টিমুখ। উদযাপনের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে দেশ জুড়ে। একধাপ এগিয়ে লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে এই রায়কে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বাস্তব ছবিটা কীরকম? বাস্তব বলছে, রায় ও রায় নিয়ে চর্চাই সার। আসলে বদলায়নি কিছুই। রায় ঘোষণার পরও তাৎক্ষণিক তিন তালাকের শিকার হতে হল এক মহিলাকে।
[ নোটে না, খুচরোতেই ব্যাঙ্ক থেকে ২.৩ লক্ষ টাকা হাতাল দুষ্কৃতীরা ]
মিরাটের বাসিন্দা ওই মহিলা। স্বামীর থেকে যখন তিনি তালাক পেলেন, ততক্ষণে ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়ে দিয়েছে, তাৎক্ষণিক তিন তালাক দেশে অসাংবিধানিক। কেন্দ্রকে এ ব্যাপারে আইন আনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং সেই সময়কালে, অর্থাৎ আগামী ছয় মাসে এই ধরনের তালাককে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শীর্ষ আদালতের এই রায়ের পর অনেকেই বলছেন আইনের আর কী দরকার! এরপর কোনও অভিযোগ এলে তা ডেমেস্টিক ভায়োলেন্স হিসেবে গণ্য হবে। কারও অভিমত, এই রায়ের পর অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পথ আরও প্রশস্ত হল। কিন্তু কোথীয় কী! চর্চা একদিকে। বাস্তব অন্যদিকে। আর তাই পণের দাবিতে রীতিমতো মারধর করা হল ওই মুসলিম মহিলাকে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই তাঁকে দেওয়া হল তিন তালাক।
[ ২৮ বছরের ‘বঞ্চনা’, প্রতিবাদে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ একটি হিন্দু পরিবারের ]
জানা যাচ্ছে, বছর ছয়েকের বিবাহিত জীবন মহিলার। তিনটি সন্তানও আছে। কিন্তু তাতেও কিছু আসে যায় না। পণের জন্য নিয়মিত মারধর চলত। এমনকী মারের চোটে গর্ভস্থ ভ্রূণও নষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহিলা। এভাবেই চলছিল। ঠিক যখন সারা দেশে তিন তালাক নিষিদ্ধ হয়েছে, তখনই স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওই ব্যক্তি। এবং কোনওভাবেই নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি। এমনকী পারিবারিক তরফে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্ত স্বামীর বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে তো কী হয়েছে, তিনি তা মানেন না।
[ OMG! হাইওয়ের টোলপ্লাজা থেকে টাকা লুট করলেন পুলিশকর্মীরাই! ]
সুবিচার চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই মহিলা। মহিলার স্বামীর নামে এফআইআর-ও দায়ের হয়েছে। তবে এই ঘটনার পর স্বাভাবিকবাবেই সুপ্রিম রায়ের কার্যকরীতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রায় তো আছে, কিন্তু তাতে বাস্তবের চেহারা বদলাবে কি? এটাই এখন প্রশ্ন গোটা দেশের। অল ইন্ডিয়া মুসলিম ওম্যান পার্সোনাল ল’বোর্ডের তরফে ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিয়ে জানানো হয়েছে, এখন প্রশ্ন হল, রায়ের পরও যারা এ কাজ করে চলেছে তাদের ঠিক কী শাস্তি হবে? এ ব্যাপারে ফের সুপ্রিম কোর্টের দরজায় কড়া নাড়া হবেই বলে জানিয়েছে ওই সংগঠন। তবে আইন-রায় দিয়েও কি এ কুপ্রথার অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারবেন কি মুসলিম মহিলারা, এই ঘটনা যেন সে প্রশ্নই তুলে দিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.