সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বুরারি কাণ্ডের ছায়া এবার উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে। দুই সন্তানকে ঘুমের মধ্যে খুন করে স্ত্রী ও সঙ্গিনীকে নিয়ে বহুতল থেকে মরণঝাঁপ ব্যবসায়ীর। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গাজিয়াবাদের ইন্দিরাপুরম এলাকায়। জানা গিয়েছে, আর্থিক অনটনের মধ্যে ছিলেন গুলশন নামে ওই ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার ভোরে নিজের ছেলে ও মেয়েকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলা টিপে খুন করে স্ত্রী ও ব্যবসার অংশীদার এখন মহিলাকে নিয়ে ইন্দিরাপুরমের বৈভব খণ্ডের বহুতলের ৮ তলা থেকে মরণঝাঁপ দেন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গুলশন ও তাঁর স্ত্রীর। সঙ্গিনীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ইদানীং আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন ওই ব্যবসায়ী। সোমবার রাতে তাঁর বিজনেস পার্টনার সঞ্জনা গুলশনের বাড়িতে আসেন। তারপর রাতে সন্তানদের খুন করে গুলশন আত্মহত্যার পরিকল্পনা করেন। সেইমতো ঘুমন্ত দুই সন্তান কৃতিকা (১৮) ও হৃতিককে (১৩) শ্বাসরোধ করে খুন করেন গুলশন। পোষা খরগোশকেও মেরে ফেলেন। তারপর স্ত্রী ও সঞ্জনার সঙ্গে আবাসনের ৮ তলা থেকে ঝাঁপ দেন। ঝাঁপ দেওয়ার আগে ফ্ল্যাটের দেওয়ালে একটি সুইসাইড নোট ৫০০ টাকার দুটি নোট ও বাউন্স হওয়া চেক দিয়ে লাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। পুলিশ প্রথমে ভেবেছিল সঞ্জনা তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওই মহিলা গুলশনের বিজনেস পার্টনার। সুইসাইড নোটে গুলশন রাকেশ ভার্মা নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন।
গুলশনের দিল্লির গান্ধীনগরে জিনসের ব্যবসা ছিল। সঞ্জনা ছিলেন তাঁর বিজনেস পার্টনার তথা ম্যানেজার। দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, রাতে তিনজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়েছিল। তা হয়তো আর্থিক অনটন নিয়েই হয়েছিল। ব্যবসা খুব একটা ভাল যাচ্ছিল না গুলশনের। তাই এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তাঁরা। আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী আজাজ করিম খান পুলিশকে জানিয়েছেন, ভোরের দিকে প্রচণ্ড জোরে কিছু পড়ায় শব্দ পেয়ে তিনি ছুটে এসে দেখেন, মাটিতে পড়ে রয়েছে তিনজনের দেহ। সপরিবারে মৃত্যুর ঘটনায় দিল্লির বুরারি কাণ্ডের মিল খুঁজে পাচ্ছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। যদিও সেক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ নিয়ে যথেষ্ট রহস্য ছিল। ইন্দিরাপুরমের ঘটনায় আর্থিক অনটনের বিষয়টিকেই প্রধান কারণ বলছেন আধিকারিকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.