দীপাঞ্জন মণ্ডল, নয়াদিল্লি: এবার মুকেশ সিংয়ের প্রাণভিক্ষার আরজি খারিজ করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এদিন সকালে রাষ্ট্রপতিকে নির্ভয়ার ধর্ষক মুকেশ সিংয়ের প্রাণভিক্ষার আরজি খারিজ করার প্রস্তাব দিয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ফলে মুকেশ সিংয়ের প্রাণ বাঁচানোর সমস্ত রাস্তাই বন্ধ হয়ে গেল। তবে বাকি তিনজন এখনও আরজি জানাতে পারে।
প্রসঙ্গত, নির্ভয়ার চার ধর্ষকের ফাঁসির দিন ধার্য হয়েছিল ২২ জানুয়ারি। কিন্তু আইনি জটিলতায় তা পিছিয়ে যায়। কবে হবে ফাঁসি, সে সম্পর্কেও কোনও নির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। উল্টে তিহার জেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রিপোর্ট চাইল পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। ফাঁসি নিয়ে জেলের ম্যানুয়ালে কী বলা রয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে আদালত। সূত্রের খবর, জেলের তরফে দিল্লি প্রশাসনের কাছে ফাঁসির নতুন তারিখ জানতে চাওয়া হয়েছে। এদিকে ফাঁসির দিনক্ষণ পিছিয়ে যাওয়া কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজাও তুঙ্গে উঠেছে। আপ ও বিজেপি একে অপরকে দোষারোপ করতে শুরু করেছে। আর এই রাজনৈতিক তরজা দেখা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন নির্ভয়ার মা আশাদেবী। ২২ জানুয়ারিই ওই চারজনকে ফাঁসিতে ঝোলানোর আরজি নিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী দ্বারস্থ হয়েছেন আশাদেবী। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তাঁর আবেদন, “আপনি ২০১৪ সাল থেকে কেন্দ্রে ক্ষমতায় রয়েছেন। মহিলাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিচ্ছেন। তাহলে ওদের ২২ জানুয়ারি ফাঁসিতে ঝোলান।”
#WATCH Asha Devi, mother of 2012 Delhi gang-rape victim: Till now, I never talked about politics, but now I want to say that those people who held protests on streets in 2012, today the same people are only playing with my daughter’s death for political gains. pic.twitter.com/FvaC89TwKI
— ANI (@ANI) January 17, 2020
কেন ২২ জানুয়ারি ফাঁসি হবে না? জানা গিয়েছে, মুকেশ সিং রাষ্ট্র্পতির কাছে প্রাণভিক্ষার আরজি জানিয়েছে। সেই আরজি এখনও খারিজ হয়নি। এদিকে তিহার জেলের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও আসামীর দয়াভিক্ষার সমস্ত রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও ১৪দিন সময় দিতে হবে। সেই নিয়ম মানলে ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় ফাঁসি দেওয়া সম্ভব হবে না। আবার দোষীদের মধ্যে পবন ও অক্ষয় এখনও কিউরেটিভ পিটিশন দাখিল করেনি। তারা যদি এই আরজি দাখিল করে, তবে ফাঁসির প্রক্রিয়া আরও পিছিয়ে যাবে। দিল্লি সরকার সূত্রে খবর, মুকেশের দয়াভিক্ষার আরজি খারিজ করার সুপারিশ করেছে কেজরিওয়াল সরকার। সেই আরজি দিল্লির উপ-রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। তিনিও মুকেশের আরজি খারিজের প্রস্তাব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সেই প্রাণভিক্ষার আরজি খারিজের প্রস্তাব রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে দিল্লি হাই কোর্টের কথা মতো বৃহস্পতিবার পাতিয়ালা হাউস কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুকেশের আইনজীবী। সেখানে বিচারক আইনি জটিলতার কথা মেনে নিয়েছে। পাশাপাশি তিহার কর্তৃপক্ষের কাছে ফাঁসির নিয়মকানুন চেয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে চার ধর্ষকের ফাঁসির দিনক্ষণ ক্রমাগত পিছতে থাকায় ক্ষুব্ধ নির্ভয়ার মা-ও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.