মাসুদ আহমেদ, শ্রীনগর: অনন্তনাগে জঙ্গিহানায় শহিদ স্টেশন হাউজ অফিসার (SHO) আরশাদ খানের বাড়ি গেলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি শ্রীনগরের করণ নগর এলাকায় আরশাদের বাড়িতে যান। শহিদের পরিবারকে তিনি সান্ত্বনা দেওয়ার পাশাপাশি পাশে থাকার বার্তারও দেন।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, এই প্রথম কেন্দ্রীয় কোনও মন্ত্রীর সফর চলাকালীন শান্ত কাশ্মীর। জনজীবন একটুও বিপর্যস্ত হয়নি উপত্যকার। এর আগে যখনই কেন্দ্রীয় কোনও মন্ত্রী কাশ্মীর সফরে গিয়েছেন, উপত্যকাজুড়ে বনধ ডেকেছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। কিন্তু অদ্ভুতভাবে এবারই ব্যতিক্রম। সূত্রের খবর, সংগঠনগুলি কেন্দ্রের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে চাইছে। তাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর ঘিরে কোনও উত্তেজনা করে নিজের পায়েই কুড়ুল মারতে চাইছে না তারা।
[ আরও পড়ুন: উর্দু গীতা, পারসি রামায়ণের অমূল্য সম্পদ দিল্লির এই একচিলতে ঘরে ]
কিন্তু কেন এই ভোলবদল? বিশেষজ্ঞদের মতে বৃহস্পতিবার সকালে শ্রীনগরে একাধিক ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতাদের বাড়িতে ইনকাম ট্যাক্সের তল্লাশি হয়। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা NIA-র রাডারে রয়েছে আহমেদ আলি শাহ গিলানি-সহ শীর্ষ হুরিয়ত নেতারা। এছাড়া ED ও IT ডিপার্টমেন্টের নজর রয়েছে তাদের উপর। ফলে অনেকটাই সুর নরম করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এছাড়া কয়েকদিন আগে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনার আরজি জানায় হুরিয়ত কনফারেন্স। মনে করা হচ্ছে, অর্থের জোগানে টান পড়ায় কিছুটা হলেও নতিস্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। তাই এই পদক্ষেপ।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন শহিদ আরশাদের বাড়িতে যান, তখন নিজেদের সমস্যার কথা জানান তাঁর পরিবারের লোকেরা। বুধবার অনন্তনাগে সেনা টহলদারি চলাকালীন হামলা হয়। মুখে কালো কাপড় জড়িয়ে এলোপাথাড়ি সেনা জওয়ানদের উপর গুলি চালাতে থাকে ‘জেহাদি’রা। ছোঁড়া হয় গ্রেনেড। দুই জঙ্গির কাছে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় রাইফেল ছিল। কাশ্মীরের কুখ্যাত জঙ্গি মুস্তাক আহমেদ জারগার নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন আল-উমর মুজাহিদিন এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে কাশ্মীরের স্থানীয় সংবাদ সংস্থা গ্লোবাল নিউজ সার্ভিস (জিএনএস)।
[ আরও পড়ুন: স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নিরিখে দেশের সেরা কেরল, তালিকায় সবার নিচে যোগীর উত্তরপ্রদেশ ]
আচমকা হামলা হওয়ায় অপ্রস্তুতে পড়ে যান জওয়ানরা। ঘটনায় ৫ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হন। আহত হন আরও পাঁচজন। আহতদের মধ্যেই ছিলেন অনন্তনাগের এসএইচও আরশাদ খান। গুরুতর জখম অবস্থায় তিনি ভরতি ছিলেন দিল্লির এইমসে। কিন্তু চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন না। দিন দুই পরে তিনি প্রয়াত হন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.