সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের সন্ত্রাসবাদীদের বুলেটে রক্তাক্ত উপত্যকা। হিজবুল জঙ্গির নারকীয় অত্যাচারের বলি বছর ১৬-র কিশোর। ভারতীয় সেনার চর হিসেবে কাজ করার অভিযোগ তুলে একাদশ শ্রেণির ছাত্রকে গুলি করে মারল হিজবুল জঙ্গিরা। ওই কিশোরকে বেঁধে রেখে মাথা লক্ষ্য করে চালানো হল একের পর এক বুলেট। হাড়হিম করা ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় অভিযোগের তির হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গিনেতা রিয়াজ নাইকো-র দিকে।
ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, কাশ্মীরীতে কথা বলতে বলতেই ওই কিশোরের মাথা লক্ষ্য করে বুলেটে বর্ষণ শুরু হয়েছে। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই উপত্যকা জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঠান্ডা মাথার খুন। হিজবুল জঙ্গিরা একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রকে নৃশংসভাবে খুন করেছে। যারা এই সব জঙ্গি সংগঠনগুলিকে সমর্থন করে, সহানুভূতি দেখায়, তারাই বলুক এভাবে কাশ্মীরের কী উন্নতি হচ্ছে। এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।’ টুইট বার্তায় তীব্র নিন্দা করে একথাই বলেছেন উপত্যকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, এই নারকীয় খুনের ঘটনায় হিজবুল নেতা নাইকোকেই দুষছে গোটা উপত্যকা। কেননা সম্প্রতি কাশ্মীর পুলিশের খাতায় মোস্ট ওয়ান্টেডের তকমা পেয়েছে এই নাইকো। তার মাথার দাম ১২ লক্ষ টাকা। পুলিশ থেকে শুরু করে ভারতীয় সেনা দুই তরফেই চলছে নাইকো-র খোঁজ। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা বেশ কয়েকবার তাকে ফাঁদে ফেলেও ধরতে পারেনি। কপাল জোরে শেষ মুহূর্তে পালিয়ে বেঁচেছে রিয়াজ নাইকো।
অবন্তিপুরার দুর্বার্গ এলাকার নাইকো মহল্লার বাসিন্দা রিয়াজ নাইকো জঙ্গি হিসেবে প্রচারের আলোয় আসে ২০১৭-র মাঝামাঝি সময়ে। ২০১৬-তে হিজবুল জঙ্গি বুরহান ওয়ানির এনকাউন্টারের পর নাইকো-ই হল এই জঙ্গি সংগঠনের বড় নেতা। ২০১৭-র মে মাসে সবজার ভাট খুন হলে সংগঠনের রাশ চলে যায় রিয়াজ নাইকোর। তারপর থেকেই একের পর এক হামলার ছক কষে চলেছে নাইকো। যদিও গতবছরই নিজে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিল এই জঙ্গি। যেখানে কাশ্মীরের পণ্ডিতদের উপত্যকায় ফেরার আমন্ত্রণ ছিল। ভিডিওতে নাইকো বলে, ‘কাশ্মীরি পণ্ডিতরা জঙ্গিদের শত্রু নন।’ এর কিছুদিন পরেই সূত্রের মারফৎ ভারতীয় সেনার কাছে খবর আসে, দক্ষিণ কাশ্মীর থেকে অল্পবয়সি কিশোরদের নিয়োগ করছে হিজবুল মুজাহিদিন। এনিয়ে উপত্যকার পুলিশকর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি হুমকির অডিও প্রকাশ করে রিয়াজ। তখন থেকেই তার বিরুদ্ধে সতর্কতা জারি হয়ে যায়। তারপর থেকেই নাইকোর খোঁজে অভিযান চলছে। আর বছর শেষ হওয়ার আগেই এই হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড চালিয়ে ফের নজর কেড়ে নিল নাইকো। এই খুনের ঘটনায় হিজবুলের সঙ্গে আইএস-এর যোগসূত্র পাচ্ছে সেনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.