,সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কে ভূমিপুত্র, কেই বা হানাদার! ইতিহাসের পাতা খুঁজে ‘আসল হিন্দুস্তান’-এর চালচিত্র তৈরির চেষ্টায় সরগরম দেশের রাজনীতি। এহেন পরিস্থিতিতে আগুনে আরও খানিকটা ঘি ঢেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর মন্তব্য, মৌর্য, গুপ্ত বা পাণ্ড্যদের নয়, মুঘলদেরই গুরুত্ব দিয়েছেন ইতিহাসবিদরা।
শুক্রবার দিল্লিতে একটি বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শাহ (Amit Shah) বলেন, “আমি ইতিহাসবিদদের কিছু বলতে চাই। আমাদের দেশে অনেক সাম্রাজ্য ছিল। কিন্তু ইতিহাসবিদরা শুধুমাত্র মুঘলদের গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তাদের বিষয়ে লিখেছেন। বাস্তবে, পাণ্ড্যরা প্রায় ৮০০ বছর রাজত্ব করেছে। অসমের আহোম সাম্রাজ্যের আয়ু ছিল অন্তত ৬৫০ বছর। আহোমরা বখতিয়ার খিলজি ও ঔরঙ্গজেবকে পরাজিত করেছে। পল্লব ও চোল সাম্রাজ্যের শাসনকাল ছিল প্রায় ৬০০ বছর। আফগানিস্তান থেকে লঙ্কা পর্যন্ত শাসন করেছে মৌর্যরা। চারশো বছর রাজত্ব করেছে গুপ্তরা। ‘অখণ্ড ভারত’ তৈরির প্রথম চেষ্টা করেন সমুদ্রগুপ্ত। কিন্তু তাদের নিয়ে কোনও বই নেই।”
এদিন ‘মহারণ: সহস্র বর্ষের ধর্মযুদ্ধ’ শীর্ষক বইয়ের উদ্বোধনে এসে শাহ বলেন, “দেশের সংস্কৃতি, ভাষা ও ধর্মকে বাঁচাতে হাজার বছর ধরে যে লড়াই চলছে তা বৃথা যায়নি। বিশ্বের সামনে ফের সগর্বে দাঁড়িয়েছে ভারত। যখন নিরপেক্ষ ইতিহাসবিদরা ইতিহাস লেখেন তখন তথ্য সামনে আসে। তাই আমি মনে করি সত্যি তুলে ধরে তথ্যসম্বলিত ইতিহাস নিয়ে বই লেখা প্রয়োজন।”
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সম্প্রতি হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার মন্তব্যে ব্যাকফুটে রয়েছে কেন্দ্র সরকার। ঘরে-বাইরে তুমুল সমালোচনার মুখে অনেকটাই সুর নরম করেছে দেশের শাসকদল। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিজেপির দুই নেতা-নেত্রী নূপুর শর্মা ও নবীন জিন্দলের কটূক্তি কিন্তু বিনা মেঘে বজ্রপাত নয়। নিরঙ্কুশ ক্ষমতায় আসা-ইস্তক বিজেপির শীর্ষ নেতাদের প্রশ্রয়ে দেশে উগ্র-হিন্দুত্ববাদের প্রসার যেভাবে ঘটে চলেছে, সংবিধান ও আইনের তোয়াক্কা না করে ঘৃণার বীজ যেভাবে বোনা হয়েছে, তাতে এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর ‘হিন্দুরাষ্ট্র’ গঠনের লক্ষ্য থেকে গরুয়া শিবির একচুলও নড়েনি তা শাহর মন্তব্যই স্পষ্ট জোরে দেয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.