সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলায় ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডব দেখেছে গোটা দেশ। দুসপ্তাহ কাটার আগেই ফের আরেক ঘূর্ণিঝড় কড়া নাড়ছে দেশের পশ্চিম উপকূলে। এবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ। কোনওদিন ঘূর্ণিঝড়প্রবণ না হয়েও আরব সাগরের উপকূলে মুম্বইয়ে আছড়ে পড়বে এই নিসর্গ। আগামিকাল, বুধবার সন্ধে নাগাদ দেশের বাণিজ্যনগরীতে তাণ্ডব চালাবে এই ঘূর্ণিঝড়। এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়লে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পাবে বিরল ঘটনা হিসাবে। গত ১৩৮ বছরে কোনওদিন ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েনি মুম্বইয়ে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে প্রচুর, মেঘভাঙা বৃষ্টি, বন্যা পরিস্থিতি, কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ মালুম হয়নি মুম্বইকরদের।
কেন বিরল? আবহবিদরা বলছেন, ভৌগোলিক কারণেই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব থেকে সুরক্ষিত থেকেছে মুম্বই। আরব সাগরে বহু ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলেও পরে তা শক্তি বাড়িয়ে মুম্বইয়ের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই শহরে সেইভাবে আছড়ে পড়তে পারেনি। শেষ ১৮৮২ সালে ঘূর্ণিঝড়ের সাক্ষী হয়েছিল মুম্বই। সাবেক বোম্বাই। তখন অবশ্য ঘূর্ণিঝড়ের আলাদ করে নামকরণ হত না। যে জায়গায় আছড়ে পড়ত সেই অঞ্চলের নাম অনুসারে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ হত। ১৮৮২ সালের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘বম্বে সাইক্লোন’। ব্রিটিশরাই এই নামকরণ করেছিলেন। তাতে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় লক্ষাধিক মানুষের। ভারতের ঘূর্ণিঝড়ের ইতিহাসে এমন ধ্বংসাত্মক ঘূর্ণিঝড়ের উদাহরণ খুব কম।
আবহবিদরা আরও বলছেন, আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি সেভাবে তৈরি হওয়ার নজির কম। যেখানে ঘূর্ণিঝড়ের আতুঁড়ঘর বঙ্গোপসাগর। মাঝে মাঝে ‘সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ বা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়। সেখানে বছরে ঘূর্ণিঝড় তেমন হয় না বললেই চলে আরব সাগরে। আরব সাগরের গতিপ্রকৃতি ও বায়ুপ্রবাহের জন্য ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলেও তা ওমান বা এডেন উপসাগরের দিকে ঘুরে যায়। কখন কখনও আবার গুজরাট উপকূলের দিকে চলে যায়। যেমন ২০১৭ সালে গুজরাটে ঘূর্ণিঝড় ‘বায়ু’ আছড়ে পড়েছিল। মনে করা হচ্ছে, আগামী ৩৬ ঘণ্টায় আরও শক্তি বাড়াতে পারে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ। ৩ জুন সন্ধ্যায় এর স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা। এখনও পর্যন্ত যা খবর, মহারাষ্ট্র উপকূলে এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানবে বলে মনে করা হচ্ছে। মুম্বই ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিকে এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.