সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২২ জানুয়ারি। অযোধ্যার রামমন্দিরে রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হল। আর এর পর মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় কেবলই রামনাম নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে শোনা গেল রামায়ণের সেই অর্থে গৌণ চরিত্রগুলির প্রসঙ্গও। উঠে এল শবরী, নিষাদ রাজা গুহক, সেতুবন্ধনের কাঠবেড়ালী এবং জটায়ুর নামও। জেনে নেওয়া যাক চরিত্রগুলির বিষয়ে।
শবরী: রামের বনবাসের সময়ই সাক্ষাৎ হয় এই বর্ষীয়সীর। পঞ্চহ্রদের অন্যতম পম্পা সরোবরের তীরে রামের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন তিনি। ঋষি মাতঙ্গ ছিলেন শবরীর গুরু। মৃত্যুর সময় তিনি বলে গিয়েছিলেন, একদিন রামচন্দ্র (Lord Ram) আসবেন তাঁর দুয়ারে। সেই থেকে অপেক্ষা শুরু হয় শবরীর। প্রতিদিন সেই বৃদ্ধা লাঠি হাতে হেঁটে যেতেন জামের সন্ধানে। তার পর সেগুলি মুখে দিয়ে স্বাদ নিতেন। যেগুলি মিষ্টি মনে হত, সেগুলি ঝুড়িতে রাখতেন। যেদিন সত্যিই রাম এলেন তাঁর কাছে, শবরী সেদিন ফল খেতে দেন রঘুপতিকে। লক্ষ্মণ অবাক হয়ে দেখেন, সেই ‘এঁটো’ ফলই খেয়ে নিচ্ছেন রাম। ভাইকে সেদিন জানিয়ে দিয়েছিলেন, যে পরম ভক্তিতে তা নিবেদিত তেমন তুল্য ফলের সমান কিছুই হতে পারে না।
জটায়ু: জটায়ু ছিলেন এক দৈব পাখি। সূর্যদেবের অশ্বচালক অরুণের কনিষ্ঠ পুত্র। সম্পাতির ভাই। ‘রামায়ণ’ (Ramayana) অনুসারে রাবণ যখন সীতাকে হরণ করে নিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় বাধা দেন জটায়ু। তবে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেও তিনি হার মানতে বাধ্য হন। পরে মৃত্যুপথযাত্রী জটায়ু রামকে বলে যান, সীতাকে কে হরণ করে নিয়ে গিয়েছেন।
কাঠবেড়ালী: সীতার কাছে পৌঁছতে লঙ্কা অভিমুখে এগিয়ে যেতে সমুদ্রের উপরে সেতু বাঁধে বানর বাহিনী। কাঠবেড়ালী সেই সময় সেই দলে মিশে গিয়েছিল। কিন্তু ভারী পাথর বওয়ার ক্ষমতা না থাকায় একটা করে খই এনে সে সমুদ্রে ফেলছিল। যা দেখে আনন্দিত রাম এসে তাঁর গায়ে হাত বুলিয়ে দেন। তাই কাঠবেড়ালীর পিঠে তিনটি দাগ দেখতে পাওয়া যায়। এই দাগ আসলে রামচন্দ্রের আঙুলের ছাপ।
নিষাদ রাজা গুহক: রামায়ণের অযোধ্য়া কাণ্ডে দেখা মেলে গুহক রাজার। যিনি হয়ে ওঠেন রামের ‘মিতা’ তথা বন্ধু। আসলে বনবাসে পথে বেরিয়ে গঙ্গা নদীর তীরে পৌঁছনো রাম, সীতা, লক্ষ্মণকে সেবাযত্ন করতে এগিয়ে এসেছিলেন তিনি। খাদ্য, পানীয় ও চমৎকার বিছানার ব্যবস্থাও করেন। কিন্তু রাম যেহেতু রাজবেশ ত্যাগ করে তপস্বীর মতো দিন কাটাবেন বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তাই সেই আতিথেয়তা আর গ্রহণ করেননি তিনি। পরে নিষাদ রাজা গুহক রামকে নদী পেরতে সাহায্য করেন। চোদ্দো বছর পরে অযোধ্যায় ফেরার পথে গুহকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ভোলেননি প্রভু রাম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.