মণিশংকর চৌধুরি,গুয়াহাটি: এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর অসমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রায় সব পক্ষই পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে অখুশি। বিজেপির তরফে উপমুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল গতকালই হিন্দু বাঙালিদের বাদ পড়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তালিকা প্রকাশের পর অল অসম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন প্রতিক্রিয়া দিয়ে জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তে তাঁরা অখুশি। তাদের দাবি তালিকা আরও দীর্ঘ হওয়া উচিত ছিল। অন্তত ৭০ লক্ষ মানুষ তালিকা থেকে বাদ পড়া উচিত ছিল। কংগ্রেসের তরফে সাংসদ আবদুল খালেক এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা ঘোষিত হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট এবং আধিকারিকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে তাঁর দাবি, তালিকায় অনেক স্থায়ী ভারতবাসীর নাম ওঠেনি। তাই, ফরেনার ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা হোক।
এ তো গেল রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কথা। কিন্তু, এখন প্রশ্ন এই ১৯ লক্ষ মানুষের কী হবে? তাঁরা কী নিজভূমে পরবাসী হলেন? রাতারাতি তাদের নিজের দেশেই বিদেশি তকমা সাঁটিয়ে দেওয়া হল? অসম সরকার বলছে ‘না’। যাদের নাম এনআরসির চূড়ান্ত তালিকায় নেই, তাদের ব্যপারে সরকার সহানুভূতির সঙ্গেই বিবেচনা করবে। যারা তালিকায় ঠাঁই পায়নি তাদের জন্য বেশ কিছু আইনি পথ অবশ্য থাকছে।
গতকালই মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল বলেছেন, যাঁদের নাম চূড়ান্ত তালিকায় থাকবে না, তাঁদের যে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হবে, তা নয়।’ তাছাড়া, যাদের নাম তালিকায় নেই তাদের এখনই বিদেশি বলে দেগে দেওয়া হবে না। ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে প্রায় হাজারখানেক ফরেনার ট্রাইব্যুনাল খোলা হচ্ছে। এনআরসিতে নাম নেই এমন কেউ চাইলে নিজেদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিয়ে আবেদন করতে পারেন এই ফরেন ট্রাইব্যুনালে। বাড়ানো হয়েছে এই ট্রাইব্যুনালে আবেদন করার সময়সীমাও। আগে এই সময়সীমা ছিল ২ মাস। তা বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে। এছাড়াও ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে সাড়া না মিললে আবেদন করা যাবে উচ্চ আদালতে। সুপ্রিম কোর্ট বা হাই কোর্টে মামলা করতে পারেন আবেদনকারীরা।
ইতিমধ্যেই সরকার ঘোষণা করেছে, দুঃস্থদের সমস্তরকম আইনি সহায়তা দেবে প্রশাসন। একইরকম ঘোষণা করেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও। কয়েকটি বাঙালি সংগঠনও আইনি সহায়তা করার রাস্তা খুলে রেখেছে। কিন্তু, মুশকিল হল তারপরও যদি নাগরিকত্ব প্রমাণ করা না যায়, সেক্ষেত্রে ডিটেনশন ক্যাম্প ছাড়া উপায় থাকবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.