স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: মাইসুরুর বিজেপি (BJP) সাংসদ প্রতাপ সিমহার ইস্যু করা পাস নিয়ে সংসদে ঢুকেছিল দুই হামলাকারী (Parliament Security Breach)। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই উঠতে শুরু করেছে নানা প্রশ্ন। যে কেউই কি ঢুকতে পারেন গণতন্ত্রের মন্দিরে? যাঁর মাধ্যমে এই পাস পাওয়া যায়, কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য কোনও দায় কি থাকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির?
লোকসভায় কার্যপ্রণালী এবং পরিচালনার নিয়ম অনুযায়ী, দর্শক গ্যালারিতে ঢোকার কার্ড ইস্যু করতে পারেন শুধুমাত্র কোনও সাংসদ। তাও যেদিন সেই ব্যক্তি দর্শক গ্যালারিতে ঢুকতে চান, তার আগের দিন সেন্ট্রালাইজড পাস ইস্যু সেল (সিপিআইসি) থেকে হলুদ রঙের ফর্ম পূরণ করতে হয়। নিয়ম বলছে, কোনও অপরিচিত ব্যক্তিকে দর্শক গ্যালারির পাস ইস্যু করা যায় না। শুধুমাত্র সাংসদ যাঁদের ব্যক্তিগতভাবে চেনেন, তাঁদেরই দর্শক গ্যালারির পাস দেওয়া যায়। আবেদনপত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পুরো নাম, বাবা অথবা স্বামীর পুরো নাম, বয়স, নাগরিকত্ব, বিদেশি হলে পাসপোর্ট নম্বর, পেশা, দিল্লির ও স্থায়ী ঠিকানার সম্পূর্ণ উল্লেখ করতে হয়। এর সঙ্গে সাংসদকে একটি শংসাপত্র দিতে হয়। লিখতে হয়, ‘দর্শক হিসাবে ঢুকতে চাওয়া উপরোক্ত ব্যক্তি আমার আত্মীয়/ব্যক্তিগত বন্ধু/আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। তাঁর যাবতীয় দায় আমার।’ কোনও সাংসদ দিনে চারজনের বেশি অতিথির জন্য পাস ইস্যু করতে পারেন না। এবং সিপিআইসি-র কাছে বিকেল চারটের আগে পৌঁছতে হবে আবেদনপত্র।
দিনের দিনও অবশ্য পাস ইস্যু করানো যায় তবে শর্তসাপেক্ষে। সংসদে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত হয় লোকসভার নিয়মের বিধি ৩৮৬ অনুযায়ী। অতিথিদের নিজেদের আইডেন্টিটি কার্ড সঙ্গে রাখতে হয়। অথচ সংসদ চত্বর থেকে ধৃত নীলম শর্মা ও অমল শিণ্ডের কাছে ছিল না কোনও আইডেন্টিটি কার্ড। পাস ইস্যুর এই প্রক্রিয়ায় চোখ বোলালেই বোঝা যাবে, ধৃত সাগর শর্মা ও ডি মনোরঞ্জনকে পাস ইস্যু করা বিজেপি সাংসদ সহজে দায় এড়িয়ে যেতে পারবেন না। সূত্রের খবর, অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছে প্রতাপ সিমহা জানিয়েছেন, ধৃত মনোরঞ্জন ডি তাঁর সংসদীয় ক্ষেত্রের বাসিন্দা। মনোরঞ্জনের বাবাকে তিনি চেনেন। তিনিই প্রতাপকে অনুরোধ করেছিলেন ছেলে ও তাঁর বন্ধুর জন্য অতিথি কার্ড ইস্যু করতে। যদিও এই দু’জনের ফর্মে প্রতাপ নন, সই করেন তাঁর সহকারী। একথাও নাকি অধ্যক্ষকে জানান বিজেপি সাংসদ।
এখানেই উঠছে প্রশ্ন। নিয়মে যেখানে স্পষ্ট করা আছে, পাস ইস্যু করতে পারেন শুধু সাংসদ। অন্য কেউ নন। তাহলে কি এই ক্ষেত্রেও মহুয়া মৈত্রের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ড শেয়ার করার মতো অপরাধ হয়ে গেল না? এবারও কি জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠল না?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.