সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নরেন্দ্র মোদির সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহযোদ্ধা যদি অমিত শাহ হয়ে থাকেন, তাহলে এই তালিকায় দ্বিতীয় নামটিই সম্ভবত অরুণ জেটলির। সেজন্যই হয়তো লোকসভা নির্বাচনে পাঞ্জাবের অমৃতসর থেকে বড় ব্যবধানে হারের পরও মোদি সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিত্ব পান জেটলি। আসলে, অর্থনীতি সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে মোদি অন্ধের মতো বিশ্বাস করতেন জেটলিকে। মোদি-জেটলির যুগলবন্দি ছিল বলেই হয়তো জিএসটি নোটবাতিলের মতো বড় সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একনজরে দেখা যাক জেটলির সেরা পাঁচ সাফল্য।
নোট বাতিল: কেউ বলেন যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। কেউ বলেন পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি। কেউ আবার বলেন, মোদি সরকারের অন্যতম বড় ভুল। যাই বলা হোক না কেন, প্রথম মোদি সরকারের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল নোট বাতিল। আর তা সম্ভব হয়েছিল মোদি-জেটলি যুগলবন্দির সৌজন্যেই। নোট বাতিলের পরবর্তী সময়ে যখন বিরোধীরা প্রতিদিন নানা ইস্যু তুলে প্রধানমন্ত্রীকে তুলোধোনা করছেন, তখনও মোদির ভাবমূর্তি রক্ষায় অবতীর্ণ হন জেটলি।
জিএসটি: স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে বড় কর সংস্কার। আলাদা আলাদা করের ঝামেলা কাটিয়ে ‘এক দেশ, এক কর’ ব্যবস্থা চালু হয় ২০১৭ সালের ১ জুলাই। পণ্য ও পরিষেবা কর নিয়ে নানান রকম বিতর্ক থাকলেও একটা বিষয় অনস্বীকার্য, জিএসটি লাগু হওয়ার পর সরকারের আয় বেড়েছে বেশ খানিকটা। যা লাগানো হচ্ছে উন্নয়নের কাজে। যদিও, বিরোধীদের দাবি এই কর চালু হওয়ার পর ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। আসলে, জিএসটি লাগু হওয়ার পর করের আওতায় ছিল না এমন অনেক ব্যবসায়ীকেই করের আওতায় আসতে হয়েছে।
বিদেশি বিনিয়োগের প্রক্রিয়া সরলীকরণ: ১৯৯১-এর অর্থনৈতিক উদারীকরণ যদি ঐতিহাসিক হয়, তাহলে প্রথম মোদি সরকারের আমলে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যে সরলীকরণ করা হয়েছে, তাও কম ঐতিহাসিক নয়। অরুণ জেটলির যোগ্য নেতৃত্বেই, বেসরকারি ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগের ছাড়পত্র দিতে সক্ষম হয় কেন্দ্র। গত বছর জানুয়ারি মাসে স্বয়ংক্রিয় রুটে এক ব্র্যান্ডের পণ্যের খুচরো ব্যবসা বা সিঙ্গল ব্র্যান্ড রিটেলে ১০০% বিদেশি বিনিয়োগের অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।
ব্যাংক সংযুক্তিকরণ: দুর্নীতি আর ঋণের বোঝায় ধুঁকছিল একাধিক ব্যাংক। একাধিক বেসরকারি ব্যাংক বসেছিল দেওলিয়া হওয়ার পথে। সেই ব্যাংকগুলিকে একটি বড় ব্যাংকের আওতায় আনার মতো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেটলিই। দেনা ব্যাংক এবং বিজয়া ব্যাংক, ব্যাংক অব বরোদার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। এসবিআইয়ের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় আরও সাতটি ব্যাংককে।
বোফর্স বিতর্কের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য: বোফর্স কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পর ১৯৯০ সালে একটি স্ট্যান্ডিং কমিটি তৈরি করা হয়। সেই স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ছিলেন জেটলি। বোফর্স কেলেঙ্কারির প্রথম নথিপত্র তিনিই তৈরি করেন। যদিও, এখনও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর বিরুদ্ধে তাঁর আনা কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
এছাড়াও ব্যক্তিগত জীবনে নামী আইনজীবী ছিলেন জেটলি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের হয়ে আদালতে সওয়াল করেছেন। তাঁর মক্কেলদের তালিকায় অটলবিহারী বাজপেয়ী থেকে শুরু করে মাধবরাও সিন্ধিয়ার মতো নেতারা ছিলেন। একাধিক, জটিল বাণিজ্যিক মামলাতেও সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেছেন জেটলি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.