সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদ্বেষ-প্রচার রুখতে ব্যর্থ রাজ্যগুলি। রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে মেলানো যখন বন্ধ হবে এবং যে দিন রাজনীতিবিদরা ধর্মের নামে রাজনীতি বন্ধ করবেন, সেদিনই শেষ হবে ঘৃণা ভাষণের প্রবণতা। বুধবার এ কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।
শীর্ষ আদালতের বিচারপতি কে এম জোসেফ (KM Joseph) এবং বিচারপতি বিভি নাগরত্নের (BV Nagaratna) বেঞ্চে একটি পিটিশনের শুনানি চলছিল এদিন। ঘৃণা ভাষণকারীদের বিরুদ্ধে একাধিক রাজ্য কেন এফআইআর (FIR) দায়ের করতে ব্যর্থ–তা নিয়েই দায়ের করা হয়েছিল ওই পিটিশন। বিচারপতিদের বেঞ্চ সেই প্রেক্ষিতেই উষ্মার সুরে জানিয়েছে, ‘‘ঘৃণাভাষণ সংক্রামক ব্যধির মতো। কিন্তু এই প্রবণতা আটকাতে যথাসময়ে পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ রাজ্য সরকারগুলি। বিচ্ছিন্নতাবাদী কিছু শক্তি টেলিভিশনে ঘৃণাভাষণ চালিয়ে গেলেও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। যে মুহূর্তে রাজনীতি আর ধর্ম, পরস্পরের ঘেরাটোপমুক্ত হবে, সেই মুহূর্তে ঘৃণা ভাষণের প্রবণতারও ইতি হবে। যে মুহূর্তে রাজনীতিবিদরা কথায় কথায় রাজনীতিতে ধর্মকে টেনে আনবেন না, সেই মুহূর্তে ঘৃণা ভাষণ বন্ধ হবে।’’ পিটিশনের পরবর্তী শুনানি ২৮ এপ্রিল।
শুধু তাই নয়, জনসাধারণের কাছে বিচারপতি কে এম জোসেফ এবং বিচারপতি বি ভি নাগরত্নের প্রশ্ন–কেন মানুষ নিজেদের ঘৃণা ভাষণের এই বিপজ্জনক চল থেকে বিরত রাখতে পারে না? বেঞ্চের কথায়, ‘‘রোজ আমরা দেখি, বিচ্ছিন্নতাবাদী-দেশবিরোধী শক্তিগুলি টিভির পর্দায় এবং গণমঞ্চগুলিতে প্রকাশ্য ঘৃণা ভাষণ দেয়। একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষ উগরে দেয়। কেন এই প্রবণতা মানুষ মেনে নিচ্ছেন? কেন ভারতীয় নাগরিকরা সংকল্প নিচ্ছেন না যে, তাঁরা কোনওমতেই অপর নাগরিক বা গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বয়ানবাজি করবেনও না এবং এবং কাউকে করতে দেবেনও না?’’
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি বি ভি নাগরত্ন প্রাক্তন দুই প্রধানমন্ত্রী, প্রয়াত জওহরলাল নেহরু (Jawharlal Nehru) এবং অটলবিহারী বাজপেয়ীর উপমাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘এ আমরা কোন দিকে এগোচ্ছি? পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু এবং অটলবিহারী বাজপেয়ীর মতো সুবক্তাদের কথা মনে করুন। ওঁদের মুখের কথা শুনতে দূর-দূরান্তের গ্রাম থেকে মানুষ ছুটে আসতেন। ভুললে চলবে না, অসহিষ্ণুতার জন্ম হয় শিক্ষা এবং জ্ঞানের অভাব থেকে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.