সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হরিয়ানা গণধর্ষণ মামলায় অবশেষে রবিবার প্রেপ্তার করা হল তিন মূল অভিযুক্তের অন্যতম নিশুকে। বাকি দুই অভিযুক্ত পঙ্কজ ও মণীশের এখনও কোনও হদিশ মেলেনি।
গত বুধবার গণধর্ষণের শিকার হন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত মেধাবী ছাত্রী৷ নির্যাতিতার বাড়ি মহেন্দ্রপুর জেলারই রেওয়ারি গ্রামে৷ কেবল রাষ্ট্রপতি পুরস্কারই পাননি তিনি, সিবিএসই-তে রাজ্যে প্রথম হয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কারও পেয়েছিলেন৷ অভিযোগ, টিউশন থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে অপহরণ করে কয়েকজন৷ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় দূরের নির্জন এলাকায় একটি বাড়ির পাশের টিউবওয়েলের কাছে৷ সেখানেই তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়৷ এরপর তাঁকে কানিনা বাসস্ট্যান্ডের কাছে ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা৷ অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা৷ তাঁরাই উদ্ধার করে ১৯ বছরের ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে ভরতি করেন৷
Rewari: Nishu, the main accused in Rewari gangrape case, arrested by Special Investigation Team (SIT). #Haryana pic.twitter.com/eRmQVNbKzy
— ANI (@ANI) September 16, 2018
তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল পুলিশ। ঘটনার তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করা হয়েছে। পুলিশের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল এএস চাওলা জানিয়েছেন, সিট পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন এসপি নাজনিন ভাসিন। সেই তদন্তকারী অফিসাররাই ঘটনার পাঁচদিন পর একজনকে গ্রেপ্তার করল। জানা গিয়েছে, অপহরণ ও ধর্ষণের নেপথ্যে মাস্টারমাইন্ড ছিল এই নিশুই। তাকে জেরা করে পুলিশ আরও জানতে পারে, ধর্ষণের পর নির্যাতিতার শারীরিক অবস্থার খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সে সময় চিকিৎসককে খবর দেয় অভিযুক্ত নিশু। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ডক্টর সঞ্জীব। নাজনিন ভাসিন জানান, যেখানে গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে সে বাড়ির মালিক ছিল এই চিকিৎসক এবং টিউবওয়েলটি ছিল তার পরিচিত দীনদয়ালের। সেই দুজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জেরা করেও বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ জানিয়েছে, গোটা বিষয়টি পূর্ব-পরিকল্পনা মাফিকই করা হয়েছে। এমনকী চিকিৎসক ও দীনদয়াল জানত তিন অভিযুক্ত ওই মেধাবী ছাত্রের সঙ্গে কী করতে চলেছে। কিন্তু তারপরও কাউকে খবর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। অভিযুক্তের মোবাইলের ফরেনসিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, দীনদয়ালকে ফোন করে একটি ঘর চেয়েছিল সে। এবং তা কোন কাজে ব্যবহৃত হবে সে বিষয়েও অবগত ছিল তারা।
এদিকে বাকি দুই অভিযুক্তকে খুঁজে বের করতে ইতিমধ্যেই একাধিক রাজ্যে তল্লাশি চালাচ্ছে হরিয়ানা পুলিশ। অভিযুক্তরা পরস্পরকে চিনত। পাশাপাশি নির্যাতিতার বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় তিনিও অভিযুক্তদের পূর্ব পরিচিত ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক দুই অভিযুক্তদের মধ্যে একজন ভারতীয় সেনার জওয়ান। বর্তমানে তার পোস্টিং রাজস্থানে। এই অভিযুক্তের খবর যে দিতে পারবে, তার জন্য ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে হরিয়ানা পুলিশ।
তবে তরুণীর অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। পেটে ও পায়ে এখনও যন্ত্রণা আছে তাঁর। রেওয়ারির সিভিল হাসপাতালে চিকিতসাধীন তিনি। ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণ হিসেবে সরকারের দেওয়া দু’লক্ষ টাকা নিতে অস্বীকার করেছেন নির্যাতিতার মা। তাঁর আরজি, অর্থ নয়, মেয়ের সুবিচার চাই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.