সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির রাজপথে ‘জওয়ান বনাম কিষাণ’ লড়াই দেখে হয়তো অনেকেই নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। পুলিশের কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে লড়াই করা ৭০ বছরের বৃদ্ধ হোন কিংবা জলকামান আর লাঠিচার্জের ভয় না পেয়ে দেবী দুর্গার মতো লড়াইয়ের অঙ্গীকার করা কৃষক-ঘরনি। দিল্লির রাজপথের সেই ছবিতে মন ভার হয়েছে অনেকেরই। সমাজের অন্নদাতারাই এভাবে বিপন্ন, হকের জন্য এভাবে জওয়ানদের সঙ্গে অসম লড়াই লড়তে হচ্ছে তাদের। দিল্লি অভিযানের রেশ কাটতে না কাটতেই আরও একটি খবর সমাজে কৃষকদের অবস্থাটা পরিষ্কার চিত্রপট তৈরি করে দিল।
হরিয়ানার ভিওয়ানির চাহারকালান গ্রাম। গত দুদিন ধরে গোটা গ্রামের মন খারাপ। কারণ দিন দুই আগে জেলের ভিতরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন গ্রামেরই এক লড়াকু কৃষক। আসলে রণবীর সিং নামে ওই বৃদ্ধ দিন তিনেক আগেই ঋণের দায়ে জেলে গিয়েছিলেন। ভাল ফলনের আশায় ঋণ নিয়েছিলেন ব্যাংকের থেকে। শোধ করতে না পারায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। আদালতের নির্দেশে ২ বছরের জেল হন রণবীরের। গত মঙ্গলবারই গোটা গ্রাম একসঙ্গে বিক্ষোভে বসেছিল। জেলা প্রশাসন ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে বিষয়ে এখনও কোনও পদক্ষেপ হয়নি। কিন্তু, মারা গিয়েছেন ওই কৃষক । গ্রামবাসীরা বলছেন, পরিবারের দশ জনের পেট ভরবে কী দিয়ে সেই চিন্তাতেই হয়তো হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন রণবীর।
ললিত মোদি, বিজয় মালিয়া, নীরব মোদি, মেহুল চোকসি এবং সর্বশেষ সনদেসারা। এই গুটিকয়েক শিল্পপতি যে অংকের টাকা নিয়ে দেশ ছেড়েছেন, তাতে গোটা দেশের কৃষকদের সব ঋণ মকুব করা যেত। এ দাবি বারবার জানিয়ে আসছেন কংগ্রেস সভাপতি। গাণিতিকভাবে এই তথ্য সত্যিও বটে। কিন্তু সমস্যা হল, তেমনটা হয় না। শুধু এই সরকার নয়, যেই সরকারে থাকুক কৃষকদের স্বার্থ অবহেলিতই থাকে। মোদি-মালিয়ারা প্রভাব খাটিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পার পেয়ে যান কিন্তু ফেঁসে যান রণবীর সিংদের মতো কৃষকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.