ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বসেই তৈরি হয়েছিল পহেলগাঁও সন্ত্রাসের ব্লুপ্রিন্ট! ভূস্বর্গে নরসংহার চালাতে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল হামাসের সন্ত্রাসীরা! গত ২২ এপ্রিলের হামলার ঘটনার তদন্তে প্রকাশ্যে আসছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। সরকারি আধিকারিকদের তরফে দাবি করা হচ্ছে, যেভাবে পহেলগাঁওয়ে বেছে বেছে পর্যটকদের হত্যা করা হয়েছে, তাতে হামাসের প্রতিচ্ছবি স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে।
পহেলগাঁও হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত যে তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে সেখানে জানা গিয়েছে, এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিল চার জঙ্গি। যার মধ্যে ২ জন পাকিস্তানের ও ২ জন কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দা। অধিকৃত কাশ্মীরের রাওয়ালকোটে হামাস জঙ্গিরা এদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। এই প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিল, ‘লস্কর ই তইবা’ ও ‘জইশ ই মহম্মদ’ দুই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বহু জঙ্গি। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর সাহায্যে চালানো হয় গোটা প্রক্রিয়া। যেভাবে পহেলগাঁওয়ে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে, সেখানেও দেখা গিয়েছে হামাসের ছায়া। বেছে বেছে আততায়ীরা পর্যটকদের ধর্মীয় পরিচয় জিজ্ঞাসা করে তাঁদের হত্যা করে। ভারতের মাটিতে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড এই প্রথম হলেও হামাসের ঘাঁটি প্যালেস্টাইন থেকে ঠিক এভাবেই সন্ত্রাস চালায় হামাস জঙ্গিরা।
সরকারি সূত্র নিশ্চিত করে জানিয়েছে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি ইজরায়েলের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া হামাস নেতারা পাকিস্তান সরকারের আমন্ত্রণে অধিকৃত কাশ্মীরে এসেছিল। সেখানে লস্কর ও জইশ-এর শীর্ষ জঙ্গিদের সঙ্গে দেখা করে হামাসের শীর্ষ নেতা খালিদ কাদ্দৌমি, নাজি জহির, মুফতি আজম, বিলাল আলসাল্লাত। তাঁদের অভ্যর্থনা জানাতে রাওয়ালকোটে বড় সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিরাট শোভাযাত্রাও বের করা হয়। সেখানেই ভারত ও ইজরায়েলের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণার ডাক দেয় এই হামাস জঙ্গিরা। কাশ্মীরকে অশান্ত করতে এই তিন জঙ্গি সংগঠনের (হামাস, লস্কর, জইশ) একজোট হওয়ায় যথেষ্ট উদ্বেগ বেড়েছিল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই কর্মসূচি আয়োজিত হয়েছিল ‘আল আকসা ফ্লাড’-এর ব্যানারে। সূত্রের দাবি, অধিকৃত কাশ্মীরে হামাসের তরফে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও তৈরি করা হয়।
এই হামলায় জঙ্গিরা মোবাইল, জিপিএস, এমনকী নাশকতার ভিডিও লাইভ রেকর্ড করেছে বলে জানা গিয়েছে, যার সঙ্গে ৭ অক্টোবরে ইজরায়েলে হামাসে হামলার মিল খুঁজে পাচ্ছেন গোয়েন্দারা। তদন্তকারীদের দাবি, প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে কীভাবে সন্ত্রাস চালাতে হবে, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে তার প্রশিক্ষণ রয়েছে হামাস জঙ্গিদের। সেটাই ব্যবহৃত হয়েছে পহেলগাঁওয়ে।
এই হামলা প্রসঙ্গে গোয়েন্দাদের দাবি, পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে চাইছে জম্মু ও কাশ্মীরের ইস্যুকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরতে। যদিও সেই মঞ্চে মিথ্যাচার চালিয়েও বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি ইসলামাবাদ। এদিকে, গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইজরায়েলের পাশে রয়েছে ভারত। হামাসের নিন্দা করে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার বার্তা দিয়েছিল দিল্লি। সেই ঘটনাকে অস্ত্র করে পাকিস্তান চেয়েছিল ভারতের বিরুদ্ধে হামাসকে পাশে পেতে। পহেলগাঁও কাণ্ডে এবার স্পষ্ট হয়ে উঠল পাকিস্তান-হামাস আঁতাত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.