সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাত তখন আড়াইটে। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন বিশাখাপত্তনমের আরআরভিপুরম গ্রামের বাসিন্দারা। আচমকাই ঘুমের মধ্যেই চোখ জ্বালা, শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন তাঁরা। কিছু বোঝে ওঠার আগেই অবশ্য জ্ঞান হারান অনেকেই। ফলে পুলিশ বা বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি। দরজা ভেঙেই ঘরে ঢুকে তাদের উদ্ধার করা হয়। এদিকে পরিবেশে মিশে যাওয়া স্টায়ারিন গ্যাসকে নিষ্ক্রিয় করতে একাধিক রাজ্য থেকে বিপুল পরিমাণ বিশেষ রাসায়নিক অন্ধ্রপ্রদেশে আনা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থা এলজি পলিমার প্রাইভেট লিমিটেডের বিশাখাপত্তনমের কারখানা থেকে বিষাক্ত স্টায়ারিন গ্যাস লিক করে। নিমেষে তা পরিবেশে মিশে প্রভাব ফেলতে শুরু করে। রাতের শিফটে কারখানায় থাকা এক কর্মী প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারেন। তিনিই পুলিশে খবর দেন। কিন্তু তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই বিষাক্ত গ্যাস তার খেল দেখাতে শুরু করে দেয়। কারখানার চারিদিকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত এই গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। আর সেই গ্যাসের প্রভাবে ঘুমের ঘোরেই ক্রমাগত অচেতন হতে শুরু করেন বহু মানুষ। উদ্ধারকার্য শুরু হতে অনেকেই দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, অনেকেই রাস্তার উপর বেহুঁশ হয়ে পড়ে যায়। আবার কেউ কেউ বাইক বা স্কুটারে চেপে এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করেন, তাঁরাও জ্ঞান হারিয়ে বাইক থেকে রাস্তায় পড়ে জখম হন। পুলিশের গাড়ি বহু মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যায়। তবে উদ্ধারে নেমে দরজা ভেঙে অনেকের বাড়িতে ঢুকতে হয় তাঁদের। উদ্ধারকারী দলের কথায়, ভিতরে ঢুকে দেখি জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে রয়েছেন অনেকে। ডিজি গৌতম স্বয়াং জানান, “মৃতদের মধ্যে দুজনের জ্ঞান হারিয়ে কুয়োতে পড়ে প্রাণ গিয়েছে।” সূত্রের খবর, পরিস্থিতি এতটাই কঠিন যে ২০০টি বাড়িতে পৌঁছতেই পারেননি উদ্ধারকারীরা। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলে ছিলেন রাসায়নিক বিশেষজ্ঞরা। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলার ডিজি এস এন প্রধান জানান, “সকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আমরা খবর পাই। এর আধঘণ্টার মধ্যে এলাকায় পৌঁছে উদ্ধারকার্য শুরু করা হয়। উদ্ধারকার্যে দুটি দল ছিল। প্রথম দলটি যায় কারখানায়। যেখানে বিষাক্ত গ্যাসটি নিষ্ক্রিয় করা হয়। আরেকটি দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে এলাকাবাসীকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।”
এদিকে গ্যাস লিক দুর্ঘটনায় মৃত ও গুরুতর অসুস্থদের পাশে দাঁড়ালেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস আর জগমোহন রেড্ডি। তিনি জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনায় যারা মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এদিকে, ভেন্টিলেশনে রয়েছেন যারা তাঁদের ১০ লক্ষ টাকা করে সরকারের তরফে দেওয়া হবে। এদিকে বিভিন্ন রাজ্য থেকে আকাশপথে Para-tertiary butyl catechol (PTBC) রাসায়নিক আনা হয়।
An ex-gratia of Rs 1 crore each to be given to the families of the deceased in the #VizagGasLeakage incident. Ex gratia of Rs 10 lakhs to be given to those on ventilator: Andhra Pradesh Chief Minister YS Jaganmohan Reddy pic.twitter.com/KgtxGiPdbD
— ANI (@ANI) May 7, 2020
500 kg of Para-tertiary butyl catechol (PTBC) chemical will be airlifted from Daman by Andhra Pradesh govt for neutralizing the gas leakage in Visakhapatnam plant: Ashwani Kumar, Secretary to Gujarat Chief Minister Vijay Rupani #VizagGasLeak pic.twitter.com/ZUfBAlu5Rs
— ANI (@ANI) May 7, 2020
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.