সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রহস্যময় চরিত্র গুমনামি বাবা ওরফে ভগবানজি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু নন। তবে তিনি নেতাজির একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। কয়েক দশক ধরে চলা জল্পনায় আপাতত ইতি টেনে এমনটাই জানিয়েছে বিচারপতি বিষ্ণু সহায় কমিশন।
২০১৩ সালে গুমনামি বাবা সংক্রান্ত একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে এলাহাবাদ হাই কোর্ট বিষ্ণু সহায় কমিশন গঠন করেছিল। ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশ সরকার ও রাজ্যপালের কাছে রিপোর্ট জমা দেয় ওই কমিশন। গতকাল উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় ও বিধান পরিষদ দুই কক্ষেই রিপোর্টটি পেশ করে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে গুমনামি বাবার একাধিক মিল পাওয়া গিয়েছে। বিশেষ করে কণ্ঠস্বরের সাদৃশ্য রয়েছে। রিপোর্টে কমিশন আরও বলে, গুমনামি বাবা বাঙালি ছিলেন। মাতৃভাষা ছাড়াও হিন্দি ও ইংরেজিতেও তাঁর দখল ছিল ঈর্ষণীয়। যুদ্ধ ও সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে তাঁর জ্ঞান ও বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। যদিও তৎকালীন ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর মধ্যে বিশেষ তাপউত্তাপ ছিল না। তবে অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন তিনি। ১৩০ পাতার রিপোর্টে বিচারপতি সহায় সাফ লেখেন, ‘এটা খুবই লজ্জার বিষয় যে এহেন ব্যক্তিত্বের অধিকারীর শেষকৃত্যে মাত্র ১৩ জন লোক উপস্থিতি ছিলেন। তিনি এর থেকে অনেক বেশি সম্মানের অধিকারী।’
রহস্যে মোড়া গুমনামি বাবাকে অনেকেই নেতাজি বলে মনে করতেন। অদ্ভুতভাবে তাঁর গলার স্বরও অনেকটাই সুভাষচন্দ্র বসুর মতো ছিল। উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে ওই সাধুর অবির্ভাবে একসময় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। নেতাজি গবেষক ও লেখক অনুজ ধরও তাঁর বইয়ে দাবি করেছেন নেতাজিই গুমনামি বাবার ছদ্মবেশে ছিলেন। তবে এর সহায় কমিশনের আগে এই দাবি খারিজ করেছিল মুখার্জী কমিশনও। উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় গুমনামি বাবার। অযোধ্যার গুপ্তার ঘাটে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তবে ওই সাধুর মৃত্যু হলেও থামেনি বিতর্ক। গুমনামি বাবার জীবনযাপন ও তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা বেশ কয়েকজন রহস্যময় ব্যক্তিকে ঘিরে জল্পনা আজও সমানে চলে। প্রসঙ্গত, হাই কোর্টের নির্দেশেই অযোধ্যায় রাম মিউজিয়ামের একাংশে গুমনামি বাবাব সংগ্রহশালা তৈরি করা হয়েছে। যদিও এখনও সেই সংগ্রহশালা সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.