সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথায় বলে বাস্তব কল্পনার চেয়েও বেশি বিস্ময়কর। এ প্রবাদ যে কতটা সঠিক তা নতুন করে আবিষ্কার করলেন মাঙ্গুবেন মাকওয়ানা। ২৯ জুনের রাতটা ৩২ বছরের ওই মহিলার কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে রইল। যখন গির অরণ্য এলাকার একটি ছোট্ট গ্রামে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে সন্তানের জন্ম দিলেন তিনি। মা হওয়ার স্মৃতির সঙ্গে রইল ভয় মিশ্রিত এক অদ্ভূত আনন্দও। কারণ প্রসবের সময়ের সবচেয়ে বড় টুইস্ট হল, বাইরে থেকে তাঁর অ্যাম্বুলেন্স পাহারা দিল ১২টি সিংহ। বিশ্বাস না হলে আবার পড়ুন। এমনই অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে আমরেলি জেলার ওই ছোট্ট গ্রামে।
যে পশুরাজ খাঁচার ভিতর থাকলেও ত্রস্ত চোখে তাকায় মানব সমাজ, সেই সিংহের মাতৃসুলভ আচরণে অবাক সকলেই। অরণ্যে তারাই রাজা। আর অন্তঃসত্ত্বা যেন তাদের অতিথি। তাই অতিথির যত্নে কোনও খামতি রাখেনি তারা। গভীর রাত আড়াইটে নাগাদ অ্যাম্বুলেন্সের ভিতর যখন ২০ মিনিটের চেষ্টায় সন্তান ভূমিষ্ঠ হচ্ছে, তখন তাকে আগলে রাখল এক ডজন সিংহের দল। যাদের মধ্যে ছিল ৩ পুরুষ সিংহও।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হঠাৎই প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাতে শুরু করেন লুনাসাপুরের বাসিন্দা মাঙ্গুবেন। ডেকে পাঠানো হয় অ্যাম্বুলেন্স। তাঁকে জাফারাবাদের সরকারি হাসপাতালে আনা হচ্ছিল। কিন্তু ব্যথা বাড়ায় মাঝপথেই অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে প্রসবের সিদ্ধান্ত নেন হাসপাতাল কর্মীরা। সেই মতো গাড়ির চালক রাজু যাদবকে গাড়ি থামাতে বলা হয়। এরপর মোবাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রসব প্রক্রিয়া শুরু করেন অ্যাম্বুলেন্সে উপস্থিত কর্মীরা। আর তখনই মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে আশেপাশের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে পশুরাজের দল। চমকে ওঠেন স্থানীয় চালক রাজু। দেখেন, রাস্তা আটকে বেশ কৌতূহলি দৃষ্টি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সের সামনে গিয়ে বসছে তারা। ভয়ে ও আতঙ্কে শিড়দাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায় তাঁর।
ভিতরে তখন প্রসূতির চিকিৎসা চলছে। মাঙ্গুবেনের সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই আস্তে আস্তে অ্যাম্বুলেন্স চালাতে শুরু করেন চালক। আর গাড়ির উপর লাল বাতি জ্বলতে দেখেই রাস্তা ছেড়ে দেয় সিংহের দল। সিংহ দলের এমন ব্যবহার নিঃসন্দেহে চিরকাল মনে রাখার মতোই। মা ও সন্তান আপাতত জাফারাবাদ হাসপাতালে ভর্তি। দু’জনই ভাল আছেন বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.