সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেস নয়। বিজেপিও নয়। গুজরাট ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হওয়ার পর সেরাজ্যের ভোটারদেরই অভিনন্দন জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, এই সময়ে দাঁড়িয়ে যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাধারণ মানুষ। এই রায় ভারসাম্যের।
[ অপারেশনের আগে মুসলিম মহিলাকে ‘কৃষ্ণনাম’ জপের নির্দেশ, বিতর্কে চিকিৎসক ]
তথ্যগত নির্বাচনী ফলাফল জানাচ্ছে, জয়লাভ করেছে বিজেপি। কিন্তু কার্যত তা গড়রক্ষার শামিল। কেননা তিন তরুণ নেতা- হার্দিক প্যাটেল, অল্পেশ ঠাকুর, জিগনেশ মেবানিকে সঙ্গে নিয়ে রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস অনেকটাই এগিয়েছে। এবং এই সাফল্য এসেছে গ্রামগঞ্জে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে। এমনকী মোদির জন্মস্থানেও হেরে গিয়েছে বিজেপি। স্পষ্টতই ধর্মীয় মেরুকরণের বাইরে অপর একটি বিভাজন পরিষ্কার হচ্ছে। যা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। যেখানে সমাজের প্রত্যন্ত অঞ্চলের আমআদমি বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে উচ্চবিত্ত ও বণিকশ্রেণি বিজেপিতেই আস্থা রেখেছে। এই রায় তাই বেশ ইঙ্গিতবাহী। সবার সঙ্গে সবার বিকাশ- এই হল প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের স্লোগান। কিন্তু তা যে সাধারণ মানুষ মেনে নেননি তা স্পষ্ট। গুজরাটের মতো এগিয়ে থাকা রাজ্যের এই ছবি, অন্যান্য রাজ্যের ক্ষোভের প্রতি ইঙ্গিত দেয়। অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশ থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দলিত নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। প্রভাব পড়েছে তারও। দলিত-পতিদার এবং ওবিসিরা সম্মিলিতভাবে বিজেপিকে হারিয়ে দিয়েছে বিভিন্ন কেন্দ্রে। সুতরাং বিজেপির একতরফা প্রচারে, ‘হিন্দুত্বের জিগিরে’ যে কাজ হয়নি তা স্পষ্ট। মানুষ নিজের সুবিধা-অসুবিধা বুঝেছেন। এবং তারই প্রতিফলন ইভিএম-এ। সাধারণ মানুষের এই বিচক্ষণতাকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
I congratulate Gujarat voters for their very balanced verdict at this hour.
It is a temporary and face-saving win, but it shows a moral defeat for BJP.
Gujarat voted against atrocities, anxiety and injustice caused to the common people. Gujarat belled the cat for 2019— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) December 18, 2017
এদিন টুইট করে তিনি বলেন, বিজেপির এই জয় সাময়িক। এবং কার্যত মুখরক্ষা। আসলে এই জয় বিজেপির নৈতিক পরাজয়কেই স্পষ্ট করেছে। কেননা, দরিদ্রদের পাশে থাকার বহু বার্তা দিয়েছেন মোদি। কিন্তু তাঁর সরকার এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সাধারণ মানুষের পক্ষে যায়নি। মমতার মতে, সাধারণ মানুষের প্রতি ক্রমাগত অবিচার হয়েছে। তারই বিরুদ্ধে রায়দান করেছে মানুষ। যে অত্যাচার ও উদ্বেগের মধ্যে তাঁদের কাটাতে হয়েছে, তার প্রতিফলন এই ফলাফল বলেই মনে করা হচ্ছে।
[ ৪১টি জনসভা করে এই ফল? প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন ওমরের ]
সভাপতি হিসেবে সদ্য দায়িত্ব নিয়েছেন রাহুল গান্ধী। গুজরাট নির্বাচন তাঁর কাছে ছিল অ্যাসিড টেস্ট। রাহুল হেরেছেন ঠিকই, কিন্তু জানিয়েছেন, ফলাফলে তিনি নিরাশ নন। বস্তুত কংগ্রেসের শক্তিবৃদ্ধি বুঝিয়ে দিয়েছে, মোদি হাওয়া ঘুরেছে। বিজেপি নেতারাও সে দেওয়াললিখন পড়তে পেরেছেন। উচ্ছ্বাসের মধ্যেও তাই চাপা টেনশন আছে। এদিকে তরুণ নেতা হিসেবে উত্থান হয়েছে হার্দিক, জিগনেশ ও অল্পেশের। রাজনৈতিক সমীকরণ বিচিত্র। আগামীদিনে গেরুয়া ঝড়কে স্তিমিত করতে বিরোধী শক্তি একজোট হবে কিনা, তা সময়ের গর্ভেই তোলা। তবে গুজরাট যে বেড়ালের গলায় ঘণ্টাটি বাঁধল, এদিন সে কথাই উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.