সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পয়লা জুলাই থেকে জিএসটি চালু হতেই সুফল মিলতে শুরু করেছে। মুম্বই, কলকাতা ও নয়াদিল্লিতে একধাক্কায় কমে গেল দুই ও চার চাকার গাড়ির দাম। জাপানি সংস্থা টয়োটার গাড়ির দাম প্রায় ১৩ শতাংশ কমেছে। কমেছে নয়াদিল্লি কেন্দ্রীক সংস্থা হিরো মটোকর্পসের বাইকের দামও। বাইকের দাম কমেছে চার হাজার টাকা পর্যন্ত। হুন্ডাই মোটরস, টাটা ও ফোর্ড ইন্ডিয়া গাড়ির দামও একাধাক্কায় বেশ খানিকটা কমে যাচ্ছে।
দেশের বৃহত্তম টু-হুইলার প্রস্তুতকারী সংস্থা হিরো মটোকর্প ক্রেতাদের জিএসটির সুবিধা প্রদানে তাদের বেশি বিক্রি হওয়া মডেলগুলির দাম ৪০০-৪০০০ টাকা পর্যন্ত কমিয়ে দিয়েছে। দাম কমানোর কথা ঘোষণা করেছে সুজুকি-মারুতি সংস্থাও। তাদের তৈরি বেশ কয়েকটি প্রাইমারি মডেলের দাম কমছে।রবিবার হিরো মটোকর্প–এর তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বেশি বিক্রিত মডেলগুলিতে সংস্থা ৪০০ টাকা থেকে ৪০০০ টাকা কমাচ্ছে। অবশ্য প্রকৃত ‘অন-রোড’ প্রাইস রাজ্যভেদে আলাদা হবে। সংস্থার দাবি, অন্য প্রিমিয়াম মডেলগুলিতে জিএসটির আগে ও পরের বাজারের মধ্যে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম কমবে। কিন্তু হরিয়ানার মতো দু’একটি রাজ্যে জিএসটির প্রভাবে দাম সামান্য বাড়বে। কারণ জিএসটি-পূর্ব ব্যবস্থায় সেখানে করের হার কম ছিল। শনিবারই মারুতি, টয়োটা এবং বিএমডব্লু তাদের বিভিন্ন মডেলের উপর ২৩০০ টাকা থেকে ২ লাখ টাকার বেশি দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রে বিভিন্ন নির্মাণ সমাগ্রীর দামে হেরফের হওয়ায় ফ্ল্যাটের দামেও তারতম্য অনিবার্য। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জিএসটিতে তৈরি ফ্ল্যাটের জন্য ক্রেতাকে অতিরিক্ত মূল্য গুনতে হবে। কারণ, বিক্রির জন্য তৈরি থাকা ফ্ল্যাটগুলি হস্তান্তরে নির্মাতাদের উপর যে করের বোঝা চাপবে, তা তাঁরা ক্রেতাদের উপরই চাপিয়ে দেবেন। তবে নতুন তৈরি হওয়া আবসনের খরচ কম হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। নির্মাতাদের জন্য এটা যথেষ্ট স্বস্তির। তার সুফল তখন ক্রেতারাও পাবেন। জিএসটিতে নির্মীয়মাণ আবাসন প্রকল্পে কর সাড়ে ছয় শতাংশ বেড়ে ১২ শতাংশ হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে জিএসটি-র হার ১৮ শতাংশ। কিন্তু নির্মাতার ধার্য করা ফ্ল্যাটের দাম থেকে জমির দামের এক-তৃতীয়াংশ বাদ দেওয়া হবে। এদিকে জিএসটির হার ২৮ শতাংশ হলেও গৃহস্থে ব্যবহৃত আসবাব বা ভোগ্যপণ্যের দামে খুব বেশি হেরফের হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বরং এই ক্ষেত্রের ব্যবসায়ীরা আগামী উৎসবের মাসগুলিতে ভাল বেচাকেনার আশা করছেন।
বিএসএইচ হাউসহোল্ড অ্যাপ্লায়েন্সের এমডি গুঞ্জন শ্রীবাস্তব বলেন, “আগে এই ক্ষেত্রটিতে ২৫ থেকে ২৭ শতাংশ কর ছিলই। এখন ২৮ শতাংশ জিএসটি হওয়ায় দাম খুব বেশি বেড়ে যাবে এমনটা আমি মনে করছি না।” অন্যদিকে, গোদরেজ অ্যাপ্লায়েন্সের বিজনেস হেড কমল নন্দী বলেন, জিএসটিতে করের হার ১-২ শতাংশ বৃদ্ধিতে দামে প্রভাব পড়ায় প্রথম কিছুদিন বিক্রি মার খেলেও, আসন্ন উৎসবের মরশুমে আবার বাজার বাড়বে। অর্থনৈতিক মহল বলেছে, ১২০০-র বেশি পণ্যের কর নতুন হারে করা হয়েছে। এই নতুন হিসাবে পণ্যের প্রকৃত মূল্য স্পষ্ট হতে সময় লাগতেই পারে। এত ব্যাপক না হলেও প্রতিবছর বাজেটের সময়ও এমনটাই হয়ে থাকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.