সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটমুখী গুজরাটে বড় চমক। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করল ভারত। এই মর্মে সোমবার একটি নির্দেশিকা জারি করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কার্যকর না হওয়ায় ‘নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫’-এর আওতায় এই পদক্ষেপ করেছে কেন্দ্র।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান (Afghanistan) থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও জৈন সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। গুজরাটের মেহসানা ও আনন্দ জেলায় বসবাসকারী অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলাশাসকদের। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ২০১৯ সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ-র প্রয়োগ না করে ঘুরিয়ে এই নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর থেকেই এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে মোদি সরকার। এই মর্মে গুজরাট, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের মোট ১৩টি জেলায় বসবাসরত অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পেতে আবেদন জানানোর নির্দেশ দিয়েছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেখানে অবিলম্বে ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন এবং ২০০৯ সালের নিয়ম অনুযায়ী এই নির্দেশকে কার্যকর করতে বলা হয়। কারণ, ২০১৯ সালে আইনে পরিণত হলেও, এখনও পর্যন্ত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সংক্রান্ত নিয়ম প্রণয়ন করেনি কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, মুসলিম দেশগুলি থেকে নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের জন্য তৈরি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এখনও বলবৎ করা হয়নি। ফলে এই গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা রয়েছে। এখনই কার্যকর হচ্ছে না সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ (CAA)। মোদি সরকারের আবেদনে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিএএ কার্যকর করার সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে রাজ্যসভা। ৯ জানুয়ারি, ২০২৩ পর্যন্ত তা বাড়িয়েছে লোকসভার সংসদীয় কমিটি।
উল্লেখ্য, নাগরিকপঞ্জি (NRC) আর সিএএ নিয়ে অনেকদিন ধরেই সরব বুদ্ধিজীবী মহল। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বেঙ্গালুরু পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ। বলিউডে যেমন অনুরাগ কাশ্যপ, স্বরা ভাস্কররা আওয়াজ তুলেছেন, তেমনই বাংলা থেকে অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, সোহাগ সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, ঋদ্ধি সেন পথে নেমে প্রতিবাদও জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে ধর্মের ভিত্তিতে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে তুমুল প্রতিবাদ হয়েছে দেশজুড়ে। পালটা গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, মুসলিম দেশগুলিতে অত্যাচারিত হিন্দু, শিখ ও অন্য সংখ্যালঘুদের বাঁচাতেই এই আইন আনা হয়েছে। এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, কেড়ে নেওয়ার নয়। সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক বাঁচাতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বিষয়টির বিরোধিতা করছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.