সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আরবিআই এবং মোদি সরকারের সংঘাতের খবর আর তেমন অজানা নয়। কিন্তু এই সংঘাতের কারণ ঠিক কী, তা নিয়ে বেশ সংশয় ছিল রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু এবার সংঘাতের পিছনের মূল কারণ প্রকাশ্যে এল। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, রাজস্ব ঘাটতি মেটাতে রিজার্ভ ব্যাংকের গচ্ছিত টাকার একটি বড় অংশ অনুদান হিসেবে চাইছিল কেন্দ্র। আর তাতে রাজি না হওয়ার ফলেই মূল সংঘাতটি হয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমটিতে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, আরবিআইয়ের গচ্ছিত টাকা থেকে প্রায় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা অর্থমন্ত্রককে পাঠানো হোক, এমনটাই চাইছিল সরকার। ঠিক কী কারণে প্রয়োজন এই টাকা তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু কেন্দ্রের এই দাবি মানতে রাজি ছিল না রিজার্ভ ব্যাংক। আরবিআইয়ের তরফে কেন্দ্রকে জানানো হয় এই টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। এতে দেশের আর্থিক পরিস্থিতির ভারসাম্য নষ্ট হবে। এক ধাক্কায় মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ বেড়ে যাবে। এর ফলে ব্যাপক হারে বাড়তে পারে দ্রব্যমূল্য। তাছাড়া এই মুহূর্তে আরবিআইয়ের মোট গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ প্রায় ৯ লক্ষ ৫৯ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট সঞ্চয়ের এক তৃতীয়াংশের বেশি দাবি করছিল কেন্দ্র। রিজার্ভ ব্যাংকের দাবি, এর ফলে শীর্ষ ব্যাংকের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়ে যেতে পারে। উল্লেখ্য, আরবিআইয়ের সঞ্চয়ের টাকা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব যৌথভাবে সরকার-এবং ব্যাংকের। বিরোধীদের দাবি, ভারতের ইতিহাসে এর আগে মাত্র একবার আরবিআইয়ের সঞ্চিত অর্থে কোপ বসানো হয়েছিল , আর সেটা ইন্দো-চিন যুদ্ধের সময়। জরুরি অবস্থায় তখন আর কোনও উপায় সরকারের কাছে ছিল না। কিন্তু এখন কী এমন জরুরি অবস্থা তৈরি হল যে ভারতকে দেশের গচ্ছিত সম্পদে হাত দিতে হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধী শিবির।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, মূলত এই আর্থিক টানাপোড়েনের কারণেই শীর্ষ ব্যাংকের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে কেন্দ্র। যা ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ির আকার নিয়েছে। এমনকী আরবিআই গভর্নর উর্জিত প্যাটেলের পদত্যাগ নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। এদিকে, এই ইস্যুতে রিজার্ভ ব্যাংক পাশে পেয়ে গিয়েছে প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনকেও। খানিকটা ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্যর ভাষাতেই তিনি বলেছেন, ‘আরবিআইয়ের রাহুল দ্রাবিড়ের মতো হওয়া উচিত নভজ্যোৎ সিধুর মতো নয়।’ আসলে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, ধীর এবং নিয়ন্ত্রিত পদক্ষেপ নেওয়াই অর্থনীতির পক্ষে ভাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.