সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত-চিন সম্পর্কে অন্যতম কাঁটা ‘আকসাই চিন’। ১৯৫৪ সালে ‘জনসন লাইন’-এর বৈধতা স্বীকার করে অঞ্চলটি যে ভারতের অংশ, তা সাফ করেন দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু। ভারতের রাজনৈতিক ম্যাপে আজও জ্বলজ্বল করছে ‘আকসাই চিন’ বা সাদা পাথরের মরুভূমি। সম্প্রতি গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চিনা ফৌজের রক্তাক্ত সংঘর্ষের পর সর্বদল বৈঠকে বিষয়টির উপর আলোকপাত করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি সাফ জানান, ভারতের সীমানায় কেউ প্রবেশ করেনি। কোনও সেনাঘাঁটিও দখল করা হয়নি। সেই মন্তব্যকে ঘিরেই দানা বাঁধে বিতর্ক। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি প্রধানমন্ত্রী মেনে নিচ্ছেন আকসাই চিন আসলে চিনা ভূখণ্ড?
শুক্রবারের সর্বদল ঘিরে শনিবার বিরোধী আক্রমণ বাড়তে থাকলে বিবৃতি জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের দাবি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শুক্রবারের সর্বদল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদির মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কোনওভাবেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (LAC) স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করতে দেওয়া হবে না। এমন কোনও চেষ্টা হলে ভারত (India) সর্বশক্তি দিয়ে তার প্রতিরোধ করবে। প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে বলেছেন, “যারা আমাদের জমিতে হানা দিয়েছিল, তাদের উচিত শিক্ষা দিয়েছেন আমাদের জওয়ানরা। আমি সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই যে দেশের সীমান্ত রক্ষা করতে চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখবে না ভারতীয় সেনা। ১৬ বিহার রেজিমেন্টের বলিদানের কারণেই চিনা অনুপ্রবেশের চেষ্টা রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে এবং ওইদিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যে অপচেষ্টা করা হয়েছিল, তা বানচাল করা সম্ভব হয়েছে।” এদিন বিবৃতি জারি করে কেন্দ্র অভিযোগ জানায়, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ পূরণ করতেই প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। সরকারি বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সর্বদল বৈঠকে সব রাজনৈতিক দলই দেশের বিপদের সময় সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু যে সময় সীমান্তে আমাদের সাহসী জওয়ানরা লড়াই করছেন তখন কয়েকজন অযথা বিতর্ক সৃষ্টি করে তাঁদের মনোবলে আঘাত হানার চেষ্টা করছেন। তবে এই ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরেছে দেশের মানুষ।
উল্লেখ্য, লাদাখ নিয়ে প্রথম থেকেই বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, চিনের সেনা ভারতের এলাকা দখল করে বসে থাকলেও মোদী সরকার তা অস্বীকার করেছে। অন্ধকারে রেখেছে গোটা দেশকেই। লাদাখে চিনা আগ্রাসন নিয়ে সর্বদল বৈঠকের পরই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, আগ্রাসনের সামনে মাথা নত করে দেশের মাটি চিনাদের হাতে তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। রাহুলের প্রশ্ন, যে জমির জন্য বিবাদ হচ্ছে, সেটা যদি চিনেরই সম্পত্তি হয়, তাহলে ভারতের সেনা জওয়ানদের প্রাণ কেন দিতে হল? কোথায় (পড়ুন কোন দেশের মাটিতে) শহিদ হলে তাঁরা? সব মিলিয়ে, প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের রাজনৈতিক ব্যাখ্যা নিয়ে বিভিন্ন স্তরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.