সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মির্জা সাজ্জাদ আলি আর মীর রওশন আলি নামে দুই পাগল দাবাড়ুকে বাঙালি তো বটেই তবে সারা ভারতের লোকই চেনেন৷ এ দুটো নাম বললেই চোখের সামনে অবধারিত ভেসে আসে সঞ্জীব কুমার ও সৈয়দ জাফরির মুখাবয়ব৷ সৌজন্যে অবশ্যই বরেণ্য সত্যিজিৎ রায়৷ তিনিই এ দুটো চরিত্রকে গণমানসে অক্ষয় করে রেখেছেন তাঁর ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’ ছবিতে৷ তবে যাঁর কলমে সৃষ্টি হয়েছিল এ দুই চরিত্র, তিনি মুন্সি প্রেমচাঁদ৷ আজ যাঁকে ১৩৬ তম জন্মদিনে ডুডলে শ্রদ্ধা জানিয়েছে গুগল৷
মুন্সি প্রেমচাঁদের সাহিত্য মানেই শিকড়ের সন্ধান৷ উর্দু সাহিত্যকে তিনিই প্রথম বাস্তবমুখী করে তোলেন৷ স্বাধীনতা না পাওয়া দেশবাসীদের যে সমস্যা, জীবনের ক্লেদ-গ্লানি তা থেকে মুখ ফিরিয়ে যে সত্যিকার সাহিত্য হয় না, তা দেখিয়ে দিয়েছিলেন তিনি৷ আর তাই তাঁর কাহিনি আজও প্রাসঙ্গিক৷ তাঁর সম্পর্কে এমনটাই বলেন প্রখ্যাত গীতিকার-পরিচালক গুলজার৷ সম্প্রতি মুন্সি প্রেমচাঁদের সাহিত্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, “স্বাধীনতার আগেও প্রেমচাঁদ যতখানি প্রাসঙ্গিক ছিলেন, এখনও ততোটাই৷ তাঁর সাহিত্য, তাঁর চরিত্ররা, জাতপাত হোক বা দারিদ্র্য- যে সমস্যা নিয়ে তিনি কথা বলেছিলেন, তা আজও একই আছে৷ বরং এখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে৷”
জীবনমুখী শব্দটির যখন ততোটাও চল ছিল না, তখন থেকেই সাহিত্যকে জীবনমুখী করে তুলেছিলেন তিনি৷ বাল্যবিবাহ, দারিদ্র্য, দুর্নীতি- এই সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে পাপ, তাই দিয়েই তিনি সাজিয়ে তুলেছিলেন তাঁর সাহিত্য৷ বাস্তবের সঙ্গে তা এতটাই সম্পৃক্ত যে আজ এত বছর, আর্থ সামাজিক পরিবেশে এত রদবদলের পরেও, মূলগত সমস্যার ছবি আমরা খুঁজে পাই তাঁর সাহিত্যই৷ আজ গুগল ডুডলের সূত্র ধরেই হয়তো প্রযুক্তিসর্বস্ব প্রজন্ম পৌঁছে যাবে প্রেমচাঁদের ভুবনে৷ খোঁজ পাবে জীবনের এক নিখাদ বাস্তবতার৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.